গোটা দেশ জুড়েই বইছে মোদী বিরোধী হাওয়া৷ মানুষ তিতিবিরক্ত গেরুয়া শিবিরের ওপর৷ এবার মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতেই মোদী বিমুখ হলেন কট্টর বিজেপি সমর্থকরা৷ মোদীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে তাঁরা এবার ‘নোটা’য় ভোট দেবেন৷
বারাণসী কেন্দ্রে এবার অন্তত এক লাখ ভোটার এবার নোটাতেই বোতাম টিপবেন। জানিয়েছেন ‘আজাদি বাঁচাও আন্দোলন’–এর প্রাক্তন কর্মী রূপেশ পান্ডে, যিনি একসময় বিজেপি নেত্রী উমা ভারতীর প্রচার সচিব ছিলেন। বিজেপিকে না দিয়ে নোটায় ভোট দেওয়ার পক্ষে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছেন একদা বিজেপির চিন্তক দলের সদস্য, এখন ‘স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ’–র নেতা গোবিন্দাচার্য আর তাঁর অনুগামীরা।
পাশাপাশি প্রচার চলছে নোটা ভোটের মূল দাবিটি, অর্থাৎ নির্বাচিত হওয়ার পর কোনও মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক কাজ না করলে তাঁকে ফিরিয়ে নেওয়ার অধিকারের পক্ষে। এবং সেই প্রচারে সামিল হয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের কর্মীরা। এক্ষেত্রে শুধু বিজেপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের ওপরেই চাপ তৈরি করা হচ্ছে, যে কাজ না করলে ফিরে আসতে হবে!
‘নোটা’ অর্থাৎ নান অফ দি অ্যাবাভ’, অর্থাৎ প্রার্থীদের কাউকেই তাঁদের পছন্দ নয় জানানোর মাধ্যমে আসলে ওরা রায় দেবেন মোদী সরকারের ভ্রান্ত নীতির বিরুদ্ধে। নোট বাতিল, জিএসটি, উচ্চ বর্ণের সংরক্ষণ— যেসব সরকারি সিদ্ধান্ত জনস্বার্থবিরোধী বলে ওঁদের মনে হয়েছে, তার বিরুদ্ধে নিজেদের আপত্তি জানাবেন। কিন্তু যেহেতু ওঁরা বিজেপিকে ভালবাসেন, নিজেদের ভোট প্রাণে ধরে অন্য কোনও দলকে দিতে পারবেন না, তাই দল বেঁধে ভোট পড়বে নোটায়।
উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের প্রায় ৩০০ প্রতিনিধি গত ১৫ মার্চ বারাণসীতেই এক অধিবেশনে সামিল হন এবং সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় নোটার পক্ষে প্রচার–আন্দোলন গড়ে তোলার। সারা বারাণসী তখন উত্তেজিত, ক্ষুব্ধ, নরেন্দ্র মোদীর সাধের ‘বিশ্বনাথ করিডোর’ গড়ে তোলার জন্য নির্বিচারে শতাব্দীপ্রাচীন বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার কারণে। আদি বারাণসীর ওই এলাকা, যা ‘পাক্কা মহল’ নামে পরিচিত, বরাবরই জনসঙ্ঘ এবং বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। কিন্তু এবার পাক্কা মহলের একটি ভোটও বিজেপি পাবে না, সব যাবে নোটায়।
পাঁচ বছর আগে যা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী তার কিছুই কার্যকর হয়নি৷ উল্টে আরও খারাপ হয়েছে মানুষের হাল৷ তার ওপরে বিজেপি সমর্থকরাই প্রকাশ্যেই জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা মোদীকে ভোট দেবেন৷ ভোটের আগেই পরাজিত হচ্ছেন মোদী৷