প্রয়াত হলেন আইটিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান যোগেশ চন্দ্র দেবেশ্বর। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। বেশ কিছু বছর আগেই ক্যানসার ধরা পড়েছিল দেবেশ্বরের। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সংস্থার তরফ থেকে শনিবারই দেবেশ্বরের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে টুইট করে শোক জ্ঞাপন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
টুইটে মমতা লিখলেন, “যোগেশ চন্দ্র দেবেশ্বরের মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত। তিনি বাণিজ্যক্ষেত্রের একটা সুবিদিত নাম। ওনার সঙ্গে আমার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। তিনি ছিলেন শিল্পক্ষেত্রের এক সুপ্রতিষ্ঠিত নেতা। ওনার পরিবার, সহকর্মী এবং শুভাকাঙ্ক্ষীদের সমবেদনা জানাই।”
১৯৪৭-এর ৪ ফেব্রুয়ারি লাহোরে জন্ম হয় ওয়াই সি দেবেশ্বরের। তাঁর পড়াশোনা আইআইটি দিল্লি থেকে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যানেজমেন্ট নিয়েও পড়াশোনা করেছেন। ১৯৬৮ সালে দেবেশ্বর যোগ দেন আইটিসিতে। মাঝারি মাপের সংস্থা থেকে আইটিসির আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতি সম্পন্ন সংস্থায় পরিণত হওয়ার মূল কারিগর ছিলেন দেবেশ্বরই।
১৯৯৬-এ সংস্থা যখন সংকটে তখন সংস্থার বৃহত্তম শেয়ার হোল্ডার বিএটির টেকওভার করার হুমকি প্রতিহত করেছিলেন দেবেশ্বরই। ধীরে ধীরে তাঁর হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়ায় আইটিসি। ২০১৭ সালে সংস্থায় নন-এক্সিকিউটিভ চেয়ারম্যান পদে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। আপাতত আইটিসির ম্যানেজিং ডিরেক্টর পদে আছেন সঞ্জীব পুরি। তিনি জানিয়েছেন, দেবেশ্বরের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বই আজ আইটিসিকে বর্তমানে সুখ্যাতির শিখরে নিয়ে গেছে। এখন আইটিসি গোটা বিশ্বের ৬০ লক্ষ মানুষের জীবিকার উৎস৷
ব্যবসাক্ষেত্রে কৃতিত্বের জন্য দেবেশ্বর বহু পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। বাংলা বিজ্ঞাপনের জগতে অনন্য অবদানের জন্য ২০১৩ সালে সংবাদ প্রতিদিন আয়োজিত সৃজন সম্মানেও পুরষ্কৃত করা হয় তাঁকে । বাংলা বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সারাজীবনের কর্মকাণ্ডের জন্য জীবনকৃতি পুরস্কার পান দেবেশ্বর। সে অর্থ বড় কোনও শিল্পপতি পরিবারে জন্ম না হলেও, যেভাবে তিনি আইটিসির মতো সংস্থার শীর্ষপদে গিয়েছিলেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া দেশের বাণিজ্যমহলে।