‘কোন পথে যে চলি, কোন কথা যে বলি…’। ছদ্মবেশী সিনেমার এই গানটাই ভোটের মুখে এখন আলিমুদ্দিনের ট্যাগলাইন।
কর্মী নেই, সংগঠনের কোমরও ভেঙেছে। তাই মাঠে-ময়দানে নেমে প্রচারে ঝড় তুলতে তারা অক্ষম। অগত্যা বাংলার ৪২টা কেন্দ্রের জন্য আলিমুদ্দিন খুলেছে ৪২ টি ফেসবুক পেজ। আর এখানেই বাম প্রার্থীরা দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছেন।
যেমন উত্তর কলকাতার বামফ্রন্ট প্রার্থী কণীনিকা বোস। দৃশ্যতই লোকবল কম। সেই খামতি ফেসবুকে পুষিয়ে নেওয়ার চেষ্টা স্পষ্ট। পথসভার ছবি, বিজেপি-তৃণমূল সম্পর্কে দলের বড় নেতাদের বক্তব্য নিয়মিত পোস্ট করছেন। আবার কলকাতা দক্ষিণের বামফ্রন্ট প্রার্থী নন্দিনী মুখোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজে বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে রূপান্তরকামী, বিশেষ ক্ষমতাসম্পন্নদের সঙ্গে ভিডিয়ো।
কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঝড় তোলা যাচ্ছে কই! কোথাও প্রতিক্রিয়া নগণ্য। আবার কোনও ক্ষেত্রে ভিডিয়ো দেখেছেন চার-সাড়ে চারশো জন। যেমন টালিগঞ্জ ফাঁড়ির সামনে ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারের পথসভার ছবি বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নন্দিনীর ফেসবুক পেজে দেখা হয়েছে ১৯০০ বার। ওই মানিকই অন্য জায়গায় পথসভা করলেও সেই ভিডিয়োর দর্শক শ’দেড়েক মাত্র। কনীনিকার পেজে প্রচারের ছবির ফাঁকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সীতারাম ইয়েচুরিদের বিবৃতিও তুলে ধরা হয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কাজ হচ্ছে কী? সোশ্যাল মিডিয়া ঢুঁড়ে ফেলেও জনগণের কাছে পৌঁছনো যাচ্ছে না। কারণ বামফ্রন্ট প্রার্থীদের পোস্ট বা শেয়ার করা ছবি, ভিডিওতে কোনও আগ্রহ দেখাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। ফলে প্রতিক্রিয়াও আসছে না কোনও। তৃণমূল সরকারের উন্নয়নের বিরোধিতা করে বাম প্রার্থীদের পোস্টে কেউ কমেন্ট করেছেন, ‘৩৪ বছর কী করছিলেন?’ আবার কেউ লিখেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়াটাকেও জঞ্জাল বানিয়ে ছাড়লেন আপনারা’। অর্থাৎ সব মিলিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বামফ্রন্টের প্রার্থীদের দৌড়াদৌড়িই সার, কাজ হচ্ছে না কোনও। ফলে আলিমুদ্দিনের কমরেডদের কপালের ভাঁজ আরও চওড়া হচ্ছে সেটা স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।