বিগত কয়েক বছরের মধ্যেই হিঙ্গলগঞ্জ যেন ধীরে ধীরে সেজে উঠছে। হাসনাবাদ বনবিবি সেতু পেরিয়ে এখন সোজা লেবুখালি যাওয়া যায়। উত্তর ২৪ পরগনার শেষ বাস টার্মিনাস। কালীতলা, সামশেরনগর, হেমনগর, যোগেশগঞ্জ, মালেকান ঘুমটি, সাহেবখালি, দুলদুলি সুন্দরবনের লাগোয়া এরকম অসংখ্য গ্রামের মানুষ লেবুখালি থেকে বাস ধরে হাসনাবাদ। আবার নদী পেরিয়ে তবে শহরে। এই বাস টার্মিনাস কথাটারই অর্থ ছিল না হিঙ্গলগঞ্জের মানুষের কাছে। এখন বদলে গিয়েছে সমস্তটা।
হিঙ্গলগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দায়িত্ব সামলেছেন সুদীপ মণ্ডল। এখন তিনি সহসভাপতি। তাঁর প্রথমবারে প্রতিশ্রুতি ছিল সাহেবখালি পঞ্চায়েতে পানীয় জলের দাবি মেটানো। কথা রেখেছেন সুদীপ। ৩ কোটি ২ লক্ষ টাকা খরচে জলের পাইপ লাইন পাতার কাজ শেষের পথে। সুদীপ জানালেন, চাড়ালখালি গ্রামের মানুষ ২০১৭ সাল পর্যন্ত পুকুরের জল পান করতেন। এখন সেখানে কাছাড়ি বাড়ি পুকুরের জল সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ করে মানুষকে দেওয়া হচ্ছে। জানা গেল উত্তর ২৪ পরগনার ২২টি ব্লকে ৭২টি ওয়াটার এটিএম বসেছে। তার মধ্যে ২৯টি হিঙ্গলগঞ্জে। শ্রীধর কাটি, মালেকান ঘুমটি গ্রামে মাটির তলায় জলের লাইন পাতার কাজ শেষের পথে।
হিঙ্গলগঞ্জে নতুন রাস্তার ফিরিস্তি তুলে ধরলেন সহসভাপতি সুদীপবাবু। সাহেবখালি পঞ্চায়েতের রায়পাড়া থেকে চাড়ালখালি যাওয়ার জন্য প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা হয়েছে। যোগেশগঞ্জ থেকে কালীতলা হয়ে সামশেরনগর পর্যন্ত রাস্তা পাকা হয়েছে। তিনি বললেন, “মন্টুরাম পাখিরা সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী হওয়ার পর গ্রামে অসংখ্য ঢালাই রাস্তা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনপর্ব চুকলে আরও যে সব রাস্তার কাজ বাকি আছে, সেগুলো শুরু হবে”।
হেমনগর চৌমাথার কাছে চায়ের দোকান চালান নমিতা বিশ্বাস। চায়ের দোকানের গায়েই সাইকেল সারাইয়ের দোকান। সঙ্গে বছর দুয়েক যোগ হয়েছে লোহার গ্রিলের কারখানা। নমিতা দেবীর স্বামী জয়দেব বিশ্বাস সাইকেল ও গ্রিলের কারবার সামলান। জয়দেববাবু বলেন, “আগে এসব গ্রিল, গেট তৈরি হয়ে আসত হাসনাবাদ, টাকি, বসিরহাট থেকে। এখন বিদ্যুৎ এসেছে। এখানেই আমার মতো অনেকেই কারখানা খুলে বসেছেন। ধারাপাত, নামতা এসব বুঝেই মানুষ প্রার্থী ঠিক করে নিয়েছেন। উন্নয়নটাই এখানকার পাটিগণিত”।