চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই অস্বস্তিকর হতে শুরু করেছে শহরের তাপমাত্রা। সপ্তাহের প্রায় শেষে এসেও যার কোনও পরিবর্তন হল না। আরও দিন দুয়েকের আগে গরম কমার যে কোনও লক্ষন নেই তা জানিয়ে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। শুক্রবার দিনের শুরুতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে দুই ডিগ্রি বেশি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে যা তিন ডিগ্রি বেশী। পশ্চিমের জেলা পুরুলিয়া , বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, ঝাড়গ্রাম, মালদহে আগামী ৪৮ ঘণ্টায় লু বইবে। কলকাতা সহ দুই ২৪ পরগণা, পূর্ব মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলী এবং নদিয়ায় আগামী দুই দিন অস্বস্তিকর আবহাওয়া জারি থাকবে। আজ ‘লু’ বইতে পারে কলকাতাতে।
সতর্কতা বৃহস্পতিবারেই দিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বেলা গড়ালে ধীরে ধীরে আবহাওয়ার অবনতি হতে পারে বলে জানাচ্ছেন আবহবিদরা। রিয়েল ফিল পৌঁছতে পারে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। সঙ্গে ‘লু’। তাই চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন দুপুরে বাড়ির বাইরে না বেরনোই শরীরের পক্ষে ভালো। একান্ত উপায় না থাকলে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে বেরোতে বলছেন চিকিৎসকরা।
দু’দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের আট জেলায় তাপপ্রবাহ বইতে পারে বলে এ দিন সতর্ক করে দিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তারা জানিয়েছে, আজ, শুক্রবার এবং কাল, শনিবার তাপপ্রবাহের কবলে পড়তে পারে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বাকি জেলাগুলিতেও অস্বস্তিকর গরম এবং অতি আর্দ্রতার জ্বালা সইতে হবে। মহানগরে এ দিনেও দহন ও অস্বস্তির ছিল চরমে।
লাগামছাড়া গরমে সকাল থেকেই নাকাল হয়েছেন পথে বেরোনো মানুষজন। যদিও প্রকৃতির রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই চলেছে ভোটের প্রচার। সন্ধ্যায় ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে অফিসফেরত জনতা ঘামতে ঘামতে বাড়ি ফিরেছে। এই পরিস্থিতিতে ট্রেনে, বাসে, মেট্রোয় একই আলোচনা চলছে। শান্তিবারি নিয়ে বৈশাখী ঝড় আসবে কবে? আশার খবর শোনাতে পারছে না হাওয়া অফিস। আবহবিদদের মতে, কলকাতায় ভয়ঙ্কর আর্দ্রতা মালুম হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কালবৈশাখীর মেঘ তৈরির জন্য পশ্চিমাঞ্চলের বাতাসে তথা গাঙ্গেয় বঙ্গের সর্বত্র পর্যাপ্ত জলীয় বাষ্প দরকার। উচ্চচাপ বলয় উধাও হয়ে যাওয়ায় সেই জলীয় বাষ্পের জোগানে ঘাটতি রয়েছে। আপাতত ঝড়বৃষ্টির আশা নেই।
ফণী রাজ্যের জ্বলীয় বাষ্প কেড়ে নিয়ে গিয়েছে। ফলে যতক্ষন না বেশি গরম থেকে সমপরিমাণ জ্বলীয় বাষ্প তৈরি হচ্ছে ততদিন বৃষ্টির সম্ভাবনা কম। সেই দিন আসতে এখনও দিন দুই তিনেক লাগতে পারে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। স্বস্তি মিলতে পারে রবিবার অথবা সোমবার।