বৃহস্পতিবার বাঁকুড়ার তমালির বাঁধে প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সমর্থনে প্রচার সভা করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঠিক তার আগে বাঁকুড়াতেই প্রচার সভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্যই তৃণমূলনেত্রীর সভা শুরু করতে দেরি হয়। তবে ভদ্রতার খাতিরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সভার সময় পিছিয়ে দিয়েছেন বলে জানান মমতা। তাঁর কথায়, ‘আমাদের মিটিং আগেই ফিক্সড হয়ে গিয়েছিল৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর জন্য আমরা দেরি করলাম৷ দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী মিটিং করবেন বলে ঠিক করেছেন৷ ভদ্রতার খাতিরে তাই আমাদের মিটিং পিছিয়ে দিলাম’৷
তবে বাঁকুড়ার সভা থেকে মোদী সরকার ও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে চড়া সুরে আক্রমণ শানান তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্যে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মমতা বলেন, ‘বিজেপি নেতাদের গোরু পাচারের সমস্ত প্রমাণ আমার কাছে আছে। পেন ড্রাইভে সব আছে। অন্তত ৪-৫ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সব প্রমাণ আমি নিয়ে রেখেছি।’ এরপরেই হুঙ্কার দিয়ে মমতা বলেন, ‘তৃণমূল প্রার্থীদের কয়লা মাফিয়া বলছে, প্রমাণ করতে পারলে সব প্রার্থীদের ফিরিয়ে নেব, মিথ্যা প্রমাণিত হলে ১০০ বার উঠবোস করতে হবে৷
নাহলে এই পেন ড্রাইভ প্রকাশ করে দেব, বিজেপির সব কুকীর্তি ফাঁস হয়ে যাবে’৷ এখানেই না থেমে মমতা বলেন, ‘আমি মাথানত করার মানুষ নই। কষ্ট করে দল গড়ে তুলেছি। ইডি-সিবিআইকে দিয়ে আমাকে রোখা যাবে না।’ তৃণমূল নেতারা তোলাবাজ, মোদীর এই অভিযোগের জবাবও দিয়েছেন মমতা। মোদীর দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মমতা বলেন, ‘যা অভিযোগ করছেন, তার কিছুই প্রমাণ নেই। প্রমাণ করুন। যদি পারেন ৪২ কেন্দ্রের প্রার্থী তুলে নেব। আর যদি না পারেন কান ধরে ওঠবোস করুন।’
এদিন মোদীর বিরুদ্ধে নিজের ইচ্ছেমতো কেন্দ্রীয় বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করার অভিযোগও তুলেছেন মমতা। বলেন, ‘বাংলার মানুষকে অসুবিধায় ফেলতেই এই গরমে এত দফার ভোট করাচ্ছে বিজেপি। শুধু তাই নয়, সব রাজ্য ঘুরে এখন বাংলায় এসে ঘাঁটি গেড়েছে দুর্যোধন আর দুঃশাসন।’ মোদীকে মিথ্যাবাদী আখ্যা দিয়ে মমতা বলেন, ‘এখানে এসে বড় বড় মিথ্যা বলেন মোদী। আমরা নাকি দুর্গাপুজো করতে দিই না। মা দুর্গার ক’টা হাত উনি জানেন? দেশের সবচেয়ে বড় দুর্যোগ মোদী।’ মাওবাদী সমস্যা নিয়েও মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তোলেন তিনি। বিজেপিকে ‘এবার বিদায়’ দেওয়ার আর্জি জানান মুখ্যমন্ত্রী।