বাংলার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই উন্নয়নে ভরিয়ে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভা নির্বাচনে এই উন্নয়নই প্রধান অস্ত্র তৃণমূলের। আর এই উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই কান্দি বিধানসভা এলাকার কলোনিগুলির বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছেন দলের কর্মী-সমর্থকেরা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, আগে এই গ্রামগুলিতে যাতায়াতের জন্য ভালো রাস্তা ছিল না। গ্রামে সবসময় বিদ্যুৎ থাকত না। সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কোনও আবাস যোজনার ঘরও তাঁরা পাচ্ছিলেন না। সেখান থেকে গত দু’বছরে এলাকার অনেক উন্নতি হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণপুর কান্দি ব্লক এলাকা থেকে বিছিন্ন ছিল। সেখানে চৌরিগাছা থেকে গ্রামে ঢোকার জন্য তৈরি হয়েছে নতুন রাস্তা। ওই গ্রামের বাসিন্দা তন্ময় রাজবংশী বলেন, গ্রামের ভিতর দু’টি বড় রাস্তা হয়েছে। পানীয় জলের সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। বাজারে মাসখানেক আগে একটি হাইমাস্ট লাইট লাগানো হয়েছে। এই সবই হয়েছে মমতার উদ্যোগে।
চার মাস আগে রাজ্য সরকার এলাকার সুভাষনগর কলোনিকে স্বীকৃতি দেয়। এরপর গত চারমাসে গ্রামে দু’টি রাস্তা তৈরি হয়েছে। পিএইচই’র প্রকল্পের মাধ্যমে পানীয় জলের একটি প্রকল্প তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ওই গ্রামের বাসিন্দা অভিষেক মণ্ডল বলেন, আগে বর্ষার সময় গ্রাম থেকে বের হওয়ার কোনও রাস্তা ছিল না। নৌকার উপর ভরসা করেই আমাদের চলতে হতো। কিন্তু এখন রাস্তা হয়েছে। চারচাকা গাড়ি গ্রামে ঢুকছে।
এদিকে মহালন্দি কলোনির পাশেই রয়েছে সরকারি মডেল স্কুল। গ্রামের ভিতরেও বেশিরভাগ রাস্তা ঢালাই হয়েছে। গ্রামে তৈরি হয়েছে বাজার। রাস্তায় হাইমাস্ট লাইট বসানো হয়েছে। এলাকার বাসিন্দা বসন্ত মণ্ডল বলেন, গত দু’বছরে এখানে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে। শুনছি সরকারি সাহায্যে গ্রামের পাশেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের বাজার ও সুপার মার্কেট তৈরি হতে চলেছে। এটা হলে এলাকার বেকার সমস্যা অনেকটাই মিটে যাবে। কান্দি পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এই এলাকায় কলোনিগুলিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির উপর জোর দেয় পঞ্চায়েত সমিতি। কয়েকটি নতুন রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।
আর এই উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই উপনির্বাচনে কলোনি এলাকার মানুষের মন পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে শাসকদল তৃণমূল। দলের কর্মীরা গ্রামে গিয়ে উন্নয়ন নিয়ে বাসিন্দাদের বোঝাচ্ছেন। বোঝানো হচ্ছে, অনেকে পাট্টা পেয়ে ঘর তৈরি করেছেন। আবার অনেকে বাংলা আবাস যোজনার মাধ্যমে ঘর পেতে চলেছেন। শাসকদল প্রতিদিন সন্ধ্যায় পাড়া বৈঠকও করছে।
এ ব্যাপারে তৃণমূলের কান্দি ব্লক সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, ওই গ্রামগুলির বাসিন্দারা কষ্ট করে জীবন-জীবিকা পালন করেন। তাঁরা বোঝেন কাদের দৌলতে তাঁদের উন্নয়ন হয়েছে। তাই কলোনি গ্রামগুলির বাসিন্দারা শাসকদলের পাশেই রয়েছেন। তৃণমূল প্রার্থী গৌতম রায় বলেন, রাজ্য সরকারের কল্যাণে ওই গ্রামগুলির মানুষের জীবনধারার উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের কর্মীরা তাঁদের সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করছেন। আশাকরি, ভোটাররা সেটা বুঝে আমাদের দিকেই সায় দেবেন।