ভোটের যুদ্ধে কুকথার ফোয়ারা ছুটেই চলছে। কিন্তু উল্টো স্রোতে হেঁটে ফের ‘আলিঙ্গনে’র রাজনীতি করলেন রাহুল গান্ধী৷ শনিবার রাহুলকে নিশানা করতে গিয়ে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে টেনে আনেন মোদী। উত্তরপ্রদেশের একটি সভায় তিনি বলেন, “আপনার বাবার তোষামুদেরা তাঁকে মিস্টার ক্লিন বলতেন। কিন্তু তাঁর জীবন শেষ হয়েছিল পয়লা নম্বর ভ্রষ্টাচারী হিসেবে”। মোদীর এই মন্তব্যের কড়া জবাব দিলেন রাহুল গান্ধী। রবিবার তাঁর ট্যুইট, “মোদীজি, যুদ্ধ শেষ। কর্মফল আপনার অপেক্ষায় রয়েছে। নিজেকে নিয়ে আত্ম উপলব্ধি আমার বাবার উপর চাপিয়ে আপনি বাঁচতে পারবেন না। আমার পূর্ণ ভালোবাসা ও মস্ত বড় আলিঙ্গন রইল আপনার জন্য”।
১৯৯১ সালে এলটিটিই জঙ্গীর আত্মঘাতী বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল রাজীব গান্ধীর। বফর্স ইস্যুতে রাজনৈতিক ধাক্কা খেলেও আদালতে ক্লিনচিট পেয়েছিলেন তিনি। দিল্লী হাইকোর্টের বক্তব্য ছিল, রাজীব গান্ধী ঘুষ নিয়েছেন বলে কোনও প্রমাণ মেলেনি। রাজীবের বিরুদ্ধে অভিযোগ এখনও প্রমাণিত হয়নি আদালতে। তা সত্ত্বেও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যেভাবে এক প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ‘পয়লা নম্বর ভ্রষ্টাচারী’ বলে মন্তব্য করলেন, তাকে শিষ্টাচার বিরোধী বলে পাল্টা প্রচার শুরু করল কংগ্রেস।
সংসদের অধিবেশন চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী মোদীকে রাহুলের আলিঙ্গন নিয়ে চর্চা কম হয়নি জাতীয় রাজনীতিতে। এবার ভোটের ময়দানে মোদীর মন্তব্যের জবাবে ফের ‘আলিঙ্গন’ প্রসঙ্গ টেনে আনলেন কংগ্রেস সভাপতি। রাহুলের এই নম্র ভাষার কড়া জবাব ফের চর্চার কেন্দ্রে। গতকাল শুধুমাত্র রাজীব গান্ধী প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করেই থেমে থাকেননি প্রধানমন্ত্রী। মোদীর দাবি, রাহুল গান্ধীর একমাত্র লক্ষ্য তাঁর ভাবমূর্তিতে কালি ছেটানো। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “ভাবমূর্তি খর্ব করে মোদীর ৫০ বছরের তপস্যাকে ধুলোয় মেশানো যাবে না। আমার ভাবমূর্তিতে কালি ছিটিয়ে, আমাকে খাটো করে এরা দেশে নড়বড়ে ও দুর্বল সরকার তৈরি করতে চাইছে”।
কিন্তু রাজীব গান্ধী সম্পর্কে মোদির ‘পয়লা নম্বর ভ্রষ্টাচারী’ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া তুঙ্গে। শুধু রাহুল গান্ধী নন, প্রধানমন্ত্রীর এধরনের মন্তব্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছে কংগ্রেসের অন্য নেতারাও। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী পদের শিষ্টাচার বারবার লঙ্ঘন করছেন মোদী। এদিন পি চিদম্বরমের ট্যুইট, প্রধানমন্ত্রী যে ‘হতাশা’ ও ‘হারের আতঙ্কে’ ভুগছেন, রাজীব প্রসঙ্গ তাঁর মন্তব্য থেকেই তা স্পষ্ট।