১. এন আর সি তালিকা থেকে বাদ গেছে ৪০ লাখ মানুষের নাম, তার মধ্যে ৩৮ লাখ বাঙালি। ৩০ লাখ হিন্দু বাঙালি, ৮ লাখ মুসলমান বাঙালি।
২. একই ডকুমেন্ট না থাকা সত্ত্বেও কোনো অসমীয়ার নাম বাদ পড়েনি। খিলঞ্জিয়া (Original Inhabitant) বলে তাদের ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছে পদবী দেখে দেখে।
৩. নো রিজন, টেকনিক্যাল রিজন, সফটওয়ার প্রবলেম ইত্যাদি নানা কারণে নাম বাদ গেছে বাঙালির। একই পরিবারের অনেকের এন আর সি তালিকায় নাম আছে, অনেকের নেই।
৪. যেসব গোর্খা, বিহারী বা মাড়োয়াড়ির নাম ওঠেনি, তাদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু লাখ লাখ বাঙালি ভূমিপুত্র হওয়া সত্ত্বেও জোর করে বাঙালির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
৫. বাঙালি সন্দেহে কয়েক হাজার বাঙালিকে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে। ১০২ বছরের বৃদ্ধ চন্দ্রধর দাসকে টেনে হিঁচড়ে ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ে হয়েছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকা রতন বিশ্বাস কে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে হাতে বেড়ি পরিয়ে রাখা হয় অমানবিক ভাবে।
৬. এন আর সি ও ‘ডি ভোটার’র নোটিশ কে কেন্দ্র করে প্রায় ৪৫ জন বাঙালি আত্মহত্যা করেছে, যার মধ্যে অধিকাংশ হিন্দু বাঙালি।
৭. গতকাল ৪ ই মে, ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে ২০ জন বাঙালিকে জোর করে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছে। যার মধ্যে ৬ জন হিন্দু বাঙালি।
৮. ১৫ ই জুন একটা ‘এক্সক্লুশন লিস্ট’ বেরবে। যাদের নাম এন আর সি তে ইতিমধ্যে নতিভুক্ত তাদেরও রিভিউ করে অনেকের নাম বাদ দেওয়া হবে। যে সংখ্যাটা কমপক্ষে আরও ২০ লাখ হবে, ধরা হচ্ছে। কেউই নিরাপদ না।
৯. অমিত শাহ এন আর সি তালিকা থেকে বাদ পড়া বাঙালিদের বঙ্গোপসাগরে ফেলার কিথা বলেছে। বারবার তাদের ‘উইপোকা’ বলেছে। তার মানে ৩০ লাখ হিন্দু বাঙালি উইপোকা? তাদের বঙ্গোপসাগরে ফেলা হবে?
১০. আসামের বিজেপির মুখ হিমন্ত বিশ্বেশর্মা বলেছে বিজেপির লুঙ্গ-ধুতির ভোট চাই না। মানে বিজেপি হিন্দু বাঙালির ভোট চায় না।
১১. বিজেপি নাগরিকত্ব বিলের মাধ্যমে হিন্দুদের সুরক্ষার কথা বলছে। কিন্তু নাগরিকত্ব বিলে নাগরিকত্বের কোনো কথা নেই। হিন্দু উদ্বাস্তু বাঙালি এই বিলের মাধ্যমে সুরক্ষা পাবে না। লোকসভায় এই ভুয়ো বিল পাশ হলেও, রাজ্য সভায় আসেইনি। তাই লোকসভার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এই বিল বাতিল হয়ে যাবে, মাত্র আর ২০ দিন বাকি, আবার নতুন করে বিল আনতে হবে। নাগরিকত্ব বিল হিন্দু বাঙালির কোনো লাভ করবে না।
মতামত লেখকের ব্যক্তিগত