জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। গত বুধবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আর এই সুযোগে ঝোপ বুঝে কোপ মেরেছে বিজেপি৷ ভোটের আবহে বিজেপি সম্পূর্ণ বিষয়টিকেই তাদের সরকারের সাফল্য বলে দাবি করছে৷ কিন্তু তাদের স্বার্থসিদ্ধি হয়নি৷ পালটা প্রশ্ন তুলে শনিবার রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘১৯৯৯ সালে মাসুদ আজহারকে পাকিস্তানে ফেরৎ পাঠানোর নেপথ্যে কারা ছিল?’’
মাসুদ প্রসঙ্গে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘‘জঙ্গি মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে সবসময়ই কঠিন শাস্তি নেওয়া উচিত৷ কিন্তু প্রশ্ন হল এর আগে তাকে পাকিস্তানে ফেরৎ পাঠানোর নেপথ্যে কারা ছিল? সন্ত্রাসের সামনে মাথা নত করে কোন সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছিল? মনে রাখা প্রয়োজন সেটা কংগ্রেস নয়, ছিল বিজেপি সরকার৷’’
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালের শুরুতে মাসুদ আজহার ভুয়ো পরিচয়পত্র দেখিয়ে পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরের শ্রীনগর আসেন। তার এই সফরের উদ্দেশ্যে ছিল হরকাতুল আনসার, হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী ও হরকাতুল মুজাহিদিনের মধ্যেকার দ্বন্দ্বের সমাধান করা৷ কিন্তু সেই বছরের ফেব্রুয়ারিতেই আজহার ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েন। জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বন্দী করে ভারত সরকার৷
পালটা প্রত্যাঘাত আনতে ১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪ অপহরণ করে জইশ জঙ্গিরা৷ যা কান্দাহার বিমান অপহরণ নামে পরিচিত৷ তালিবার জঙ্গিদের মধ্যস্থতায় জইশ দাবি করে তাদের প্রধান মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দিলে তবেই অপহৃত বিমানের সকলকে ছেড়ে দেওয়া হবে৷
দিল্লির মসনদে তখন বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ী সরকার৷ অপহৃতদের মুক্তির প্রতিশ্রুতিতে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতের হাতে ধৃত মাসুদ আজহারকে ছেড়ে দেয়৷ নিরাপদে ফিরে আসে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৮১৪-র যাত্রী ও ক্রু মেম্বাররা৷
মাসুদ প্রসঙ্গে পদ্ম শিবিরের এই অবান্তর দাবির বিপক্ষে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন প্রাক্তন প্রধঝানমন্ত্র মনমোহন সিং৷ এবার জবাব দিলেন কংগ্রেস সভাপতি৷ রাহুল যেভাবে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন তাতে যে আবারও মোদীর মুখ পুড়ল তা বলাই বাহুল্য৷