কংগ্রেস আমলেও অনেকগুলি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল। কিন্তু, তা নিয়ে বিজেপির মতো ফলাও করে প্রচার করেনি ইউপিএ সরকার। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এবার এই ভাষাতেই আক্রমণ শানালেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মনমোহন জানান, তাঁর আমলেও অনেকগুলি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল। কিন্তু, তা নিয়ে ফলাও করে প্রচার করেনি ইউপিএ সরকার। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মতে, সেনার সাফল্য ছিল কৌশলগত পদক্ষেপ এবং ভারত-বিরোধী শক্তিগুলিকে মোক্ষম জবাব দেওয়ার অস্ত্র। এই সাফল্যকে কোনওভাবেই ভোটের প্রচারে কাজে লাগানো হয়নি৷
প্রসঙ্গত, এর আগে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রথম ইউপিএ আমলের মন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও দাবি করেছিলেন, মনমোহন জমানায় অন্তত ১১ বার সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিল ভারতীয় সেনা। কিন্তু সেই সাফল্যকে ব্যবহার করে প্রচারের আলোয় আসার চেষ্টা করেনি কংগ্রেস। এবার অনেকটা তেমনই দাবি করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন।
তিনি বলেন, ‘ভারতের জাতীয় নিরাপত্তায় সমঝোতা করার অভিযোগ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। পুলওয়ামায়, দেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত জাতীয় সড়কে জঙ্গী হামলায় ৪০ জন সেনা আধিকারিকের মৃত্যু হল। এটা উদ্বেগজনক এবং নিরাপত্তার গাফিলতি। তাছাড়া সেনার তরফে আকাশপথে জওয়ানদের নিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়েছিল, যা মোদী সরকার প্রত্যাখ্যান করে। এমনকী জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের দেওয়া নিরাপত্তা সতর্কতাও মানা হয়নি।’
মনমোহন আরও বলেন যে, ‘গত পাঁচ বছরে ভারতের ওপর একের পর এক হামলা চালিয়েছে জঙ্গীরা। পাম্পোর, উরি, পাঠানকোট, গুরদাসপুর, সুনজান সেনা ক্যাম্প, অমরনাথ যাত্রার মতো হামলা অনেক হয়েছে। মোদী সরকারের সবচেয়ে বড় ভুল হল পাঠানকোট হামলার তদন্তে আইএসআইকে ডাকা। এতে সেনার মনোবল ভেঙে গিয়েছিল। গত পাঁচ বছরে জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতি হচ্ছে।’
এরপরই তাঁর বিস্ফোরক দাবি, ‘আমি মনে করিয়ে দিতে চাই, আমাদের সেনাকে সবসময় পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া থাকে সমস্তরকম হামলার জবাব দেওয়ার জন্য। আমাদের সময়ও অনেক সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হয়েছিল। আমাদের কাছে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ছিল কৌশলগত পদক্ষেপ এবং ভারত-বিরোধী শক্তিগুলিকে মোক্ষম জবাব দেওয়ার অস্ত্র। আমরা কখনই এই সাফল্যকে ভোটের ময়দানে কাজে লাগাতে চাইনি। গত ৭০ বছরে কোনও সরকারকে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সেনার সাফল্যের আড়ালে লুকোতে হয়নি।’
ভোট চলাকালীন মনমোহন যেভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ইস্যুতে মোদী সরকারকে কাঠগড়ায় তুললেন, তাতে যে বেশ ভাল মতোই বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি, তা বলাই বাহুল্য।