ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বাংলার হাল হকিকত বদলে দিয়েছেন, তাঁর আমলে যে ‘এগিয়ে বাংলা’, এ কথা আগেই অনেক কেন্দ্রীয় রিপোর্টে পরিষ্কার হয়ে গেছে। মমতার আমলে যে রাজ্যের সাধারণ মানুষের রুজি রোজগারের সংস্থান হয়েছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আয়ও বেড়েছে, এবার এমনটাই জানাচ্ছে আয়কর দফতর।
দেশে যে পরিমাণ আয়কর আদায় হয়, তার সিংহভাগ শিল্প থেকে আদায় হওয়া কর বা কর্পোরেট ট্যাক্স। সর্বসাধারণের থেকে পাওয়া করের অঙ্ক তার তুলনায় অনেকটাই কম। কিন্তু আয়কর দফতরের সাম্প্রতিককালের হিসেব বলছে, কর্পোরেট ট্যাক্সের সঙ্গেই টক্কর দিচ্ছে সাধারণ মানুষের জমা করা আয়করও। এ রাজ্যেও সেই ছবি স্পষ্ট। গত আর্থিক বছরে বাংলা থেকে যে আয়কর আদায় হয়েছে, সেখানে বড় ভূমিকা নিয়েছে ব্যক্তিগত আয়কর।
দফতরের হিসেব বলছে, ২০১৭-‘১৮ আর্থিক বছরের তুলনায় এবার এ রাজ্যে ব্যক্তিগত আয়কর বেড়েছে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা। গত আর্থিক বছরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ব্যক্তিগত চাকরিজীবীদের করের হার বাড়ায়নি। বরং সামান্য রেহাই দেওয়া হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তের পরেও রাজ্য থেকে হাজার কোটি টাকা আয়কর আদায় বৃদ্ধিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন দফতরের কর্তারা। রাজ্যে সাধারণ মানুষের আয় যে বাড়ছে, এটি তারই একটি মাপকাঠি, এমনটাই বলছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, কর্পোরেট ট্যাক্স বাবদ দেশে আয় হয় প্রায় ৬ লক্ষ ৫০ হাজার ১৭ কোটি টাকা। আর সাধারণ মানুষের থেকে ব্যক্তিগত আয়কর আদায় হয় প্রায় ৪ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৬৬ কোটি টাকা। সেখানে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাংলার শুধু কলকাতা সার্কেল থেকে মোট আয়কর আদায় হয়েছে ৪৩ হাজার ১৭৯ কোটি টাকা। তার আগের বছরের তুলনায় আয়কর বৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ। যে টাকা আদায় হয়েছে গত আর্থিক বছরে, তার মধ্যে কর্পোরেট ট্যাক্স বাবদ আদায় হয়েছে প্রায় ২৭ হাজার ৫১৪ কোটি টাকা। আর বাকি ১৫ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা ব্যক্তিগত ইনকাম ট্যাক্স।
আয়কর দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ২০১৭-‘১৮ আর্থিক বছরে পেশাদার ও চাকরিজীবীদের থেকে আদায় হয় ব্যক্তিগত আয়করের অঙ্ক ছিল ১৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আদায় বেড়েছে প্রায় এক হাজার কোটি। এর থেকেই পরিষ্কার যে রাজ্যের পেশাদার ও চাকরিজীবীদের আয়ের পরিমাণ বেড়েছে। যা মমতার আমলে বাংলার অগ্রগতি ও উন্নয়নের ছবিটাই স্পষ্ট করছে।