গত ১১ এপ্রিল থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গেছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। সাত দফা নির্বাচনের মধ্যে ইতিমধ্যেই হয়ে গেছে চার দফার ভোট। বাকি আরও ৩ দফা। তাই আগামী ৫ বছরের জন্য দিল্লীর মসনদে বসবেন কে, সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা। কিন্তু ভোটে যেই জিতুন, নতুন সরকারের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলবে, তেলের দামের বিশাল লাফ। পরিস্থিতি এমনই যে, নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেই বাধ্য হতে পারে তেলের দাম বাড়াতে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক কালে বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। দেশে ভোট চলায়, তার সরাসরি প্রভাব এখনও ভারতবাসীর পকেটে না পড়লেও, ভোট মিটতেই সেই বোঝা চাপবে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে, আশঙ্কা অর্থনীতিবিদদের। বিশ্বের বাজারে তেলের দাম বাড়ার অর্থ, টাকার দামে আরও পতন এবং অবশ্যম্ভাবী মুদ্রাস্ফীতি।
উল্লেখ্য, মোদী সরকারের আমলে ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে ভারতে রোজ তেলের দাম নির্ধারণের পদ্ধতি গ্রহণ করা হয়। এর ফলে প্রতিদিনই তেল সংস্থাগুলো বিশ্ববাজারের দামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে পরিশোধিত তেলের দাম বেড়েই চলেছে। গত বছর অক্টোবরে যখন বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলারে পৌঁছেছিল, তেল সংস্থাগুলো লিটারে ১০ টাকা পর্যন্ত পেট্রোলের দাম বাড়িয়েছিল। এমন লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে দেশজোড়া প্রতিবাদের মুখে পড়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার।
আসলে আমেরিকা-ইরান চাপানউতোর যত বাড়ছে, তার সরাসরি প্রভাব পড়ছে তেলের দামে। তেহরানের তেলের একটি বড় অংশের ক্রেতা ভারত। কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে অশান্তির আবহে, ট্রাম্প প্রশাসনের কড়া নজর রয়েছে ভারতের উপর। ইরানের তেল কেনা বন্ধ করতে হলে, পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে ভারতের মত দেশে। ডলারের তুলনায় আরও পড়তে পারে টাকার দাম।
তেল সংস্থাগুলো অবশ্য বর্তমানে তেলের দামের স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নেপথ্য কাহিনী নিয়ে মুখে কুলুপ। প্রশ্ন উঠছে, মোদী সরকারের চাপের কাছে মাথানত করেই কি তারা সাময়িক স্থিতাবস্থার রাস্তায় হাঁটতে বাধ্য হচ্ছে? বিরোধীরাও এ নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছে। কংগ্রেস নেতা অখিলেশ প্রতাপ সিংহের মতে, ভোটবাক্সে ডিভিডেন্ডের লক্ষ্যে মোদী সরকার নিজের তৈরি করা নিয়মই ভাঙছে। যার অবশ্যম্ভাবী ফল, সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি।