সোমবার গোটা দিন বহরমপুরের ভোট পর্যবেক্ষণ করার পর রাজনৈতিক মহলে এখন এইসব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে যে, এবার কি ভেঙে গেল দীর্ঘদিনের মিথ? অধীর ম্যাজিক কি তবে সুপার ফ্লপ? হ্যাঁ, চতুর্থ দফার ভোটের পর এমনই প্রশ্ন উঠে এল।
প্রসঙ্গত, এতদিন শোনা যেত, ভোট মানেই অধীর চৌধুরির নিজস্ব মেশিনারি টিম। পঞ্চায়েত, বিধানসভা বা লোকসভা ভোট হলেই অধীর ভোট চালনা করতেন হয় জেলা কংগ্রেস ভবন, নয় তো চৌধুরিভিলায় বসে। কিন্তু গতকাল সেই অধীরকে দেখা গেল রাস্তায় নেমে কার্যত দৌড়াচ্ছেন। কখনও দৌড়ে এক বুথে গিয়ে দলীয় এজেন্টকে বুথে ঢোকাচ্ছেন, আবার কখনও বাইকে চেপে ছুটছেন আরেক বুথের দিকে। হ্যাঁ, সোমবার কার্যত নিঃসঙ্গ লাগল বহরমপুর পুরসভাকে দু’দুবার বিরোধী শূন্য করা বা লোকসভায় লক্ষ লক্ষ ভোটে জেতা অধীরকে। তৃণমূলের দাপটে যে তিনি বেকায়দায় তা প্রমাণিত হল তাঁর তৎপরতা দেখে।
গতকাল, সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ কাশিমবাজারের বাড়ি থেকে সোজা জেলা অফিসে চলে আসেন অধীর। সেখান থেকেই ফোন পেয়ে ছুটে যান বিটি কলেজে। এজেন্টকে বুথে বসাতে ফের ফোন করেন। কৃষ্ণনাথ কলেজিয়েট স্কুলে একই ঝামেলার মুখোমুখি হতে হয় তকে। এক কর্মীর বাইকে বসে দৌড়ে যান সেখানে। গিয়ে বলেন, ‘আমিই সেন্ট্রাল ফোর্স। আমিই কমান্ডার।’ শুধু তাই নয়, কৃষ্ণনাথ কলেজের বুথে ঢুকে চিৎকার করতেও দেখা যায়। তারপর হঠাতই একজনের পিছু নিয়ে নিজেই কলেজ করিডোরে ছুটতে থাকেন। তাকে ধরেও ফেলেন তিনি। পুলিশ এবং অধীরের সামনেই কংগ্রেসিরা মারতে থাকে ধৃত ব্যক্তিকে।
ভোট শেষ হতে কার্যত হতাশই দেখাচ্ছিল অধীরকে। অন্যবার লোকসভা ভোটে অধীর বহরমপুর ছাড়াও বেলডাঙা, কান্দি যান। কিন্তু এবার বহরমপুর শহরের বাইরে পা-ই ফেলতে পারলেন না তিনি। একদা বহরমপুরের বেতাজ বাদশা অধীর শুধু মরিয়া হয়ে ছুটে বেড়ালেন রাস্তায়।