গত ১০ মার্চ লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। আর ওইদিন থেকেই লাগু হয়ে গেছে নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি। নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ ছিল প্রচারে কোনও দল ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনও কীর্তি, এবং ছবি তাদের প্রচারে ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও নির্বাচনী প্রচারে বেরিয়ে প্রতিটি সভাতেই কার্যত সেনার নামে ভোট চাইছেন মোদী। শুধু তাই নয় বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বিরুদ্ধেও উঠছে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ। কিন্তু তারপরও নির্বাচন কমিশন ঠুঁটো জগন্নাথ! তাই কমিশনের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, বিজেপির শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে একের পর এক নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ করলেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন।
সোমবার বিষয়টি নিয়ে শিলচরের কংগ্রেস সাংসদ সুস্মিতা দেব সর্বোচ্চ আদালতে গেলেন। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ জানিয়েছে, আগামীকাল মামলাটি শুনবে শীর্ষ আদালত। এদিকে, এদিন বিকেলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, কালই নরেন্দ্র মোদী ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে জমা পড়া বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে কমিশন। সুস্মিতার দাবি, কমিশনের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মোদী-শাহরা সেনাবাহিনী নিয়ে রাজনৈতিক কথা বলছেন। তৃতীয় দফায় ভোটের দিন মোদী আদর্শ আচরণবিধি ভেঙে রোড শো করেছেন। ধর্মীয় মেরুকরণ ঘটাতে ঘৃণ্য ভাষণ দিচ্ছেন। তা নিয়ে গত তিন সপ্তাহে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে নির্বাচন কমিশনে। কিন্তু এখনও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি কমিশনের তরফে। ১৪৬ পাতার এক আর্জিতে তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচনীবিধি ভঙ্গের অভিযোগের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে, আদালত সেই নির্দেশ দিক।
কংগ্রেস শিবিরের দাবি, কমিশন পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য মোদী-শাহদের নামে অন্তত ৪০টি অভিযোগ রয়েছে। তবুও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। তাদের অভিযোগ, মডেল কোড অফ কনডাক্ট এখন ‘মোদী কোড অফ কনডাক্ট’-এ পরিণত হয়েছে। দু’রকম নীতি নিয়েছে কমিশন। একটি মোদী-শাহদের জন্য, অপরটি বাকি সকলের জন্য। গতকাল আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। আদালত তাঁর কাছে জানতে চায়, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন কারা? স্পষ্ট করে বলুন।’ তখন সিংভি প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতির নাম উল্লেখ করেন। তারপরেই প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানিয়ে দেন, আগামীকাল মামলাটি শুনব।