আগামী ২৯ তারিখ চতুর্থ দফার ভোট। কিন্তু তার আগেই
রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জোড়া ধাক্কা খেয়ে বেশ ভাল মতো বেকায়দায় পড়েছে বিজেপি। প্রথমত, কৃষ্ণনগরের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে কুরুচিকর মন্তব্যের জন্য নদীয়া উত্তরের বিজেপি সভাপতি মহাদেব সরকারকে ২৬ তারিখ বিকেল চারটে থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টা সবরকম প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল নির্বাচন কমিশন। এই প্রথম কুকথা বলার জন্য এ রাজ্যের কোনও রাজনৈতিক দলের নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল কমিশন। আর এর পাশাপাশিই বিজেপির মিছিলে শিশুদের ভিডিও ইন্টারনেট থেকে মুছে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২২ এপ্রিল কৃষ্ণনগর গভর্মেন্ট কলেজের মাঠে অমিত শাহের সভামঞ্চে মহাদেব সরকার তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্রকে উদ্দেশ্য করে কুরুচিকর ও লিঙ্গবৈষম্যমূলক মন্তব্য করেন মহাদেব। তিনি বলেন, ‘আপনি বলছেন আপনি উচ্চশিক্ষিতা। কিন্তু আপনি ভারতীয় নারীদের বিশেষত্ব জানেন না। ভারতীয় নারীদের লজ্জাই ভূষণ। এই দেশ সতী, সাবিত্রীর দেশ। আর আপনি রাতে রঙিন জল সেবন করেন।’ মহাদেব সরকারের এ হেন মন্তব্যের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। এরপরই সুপ্রিম কোর্ট কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।
কমিশন মহাদেব সরকারকে শোকজ করেছিল। শো কজের জবাবও দিয়েছিলেন মহাদেব। কিন্তু সেই জবাবে কমিশন সন্তুষ্ট না হওয়ায় এই পদক্ষেপ করল। আগামী ২৮ তারিখ বিকেল চারটে পর্যন্ত কোনওরকম প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না মহাদেব। চাপে পড়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এর প্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট ও কমিশনের নির্দেশ আমরা মানব।’ উল্লেখ্য, ২৯ এপ্রিল কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে ভোট হওয়ায়, তার আগে আর প্রচার করতে পারবেন না তিনি।
অন্যদিকে, পশ্চিমবঙ্গ শিশু অধিকার সুরক্ষা আয়োগের করা অভিযোগের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করল কমিশন। বিধিভঙ্গ করে নির্বাচনী প্রচারে শিশুদের ব্যবহার করায় বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায় শিশু সুরক্ষা আয়োগ। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্টের বিরুদ্ধে এই কাজ বলে নির্বাচন কমিশনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে গত ১৬ এপ্রিল তারা চিঠি পাঠায় তারা। তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এবার শিশুদের নিয়ে প্রচার মিছিলের সব রকম ভিডিও ফুটেজ ইন্টারনেট থেকে তুলে নিতে বিজেপিকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন।