৫ বছর আগে দেশবাসীকে ‘আচ্ছে দিন’ আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতায় এসেছিলেন ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’ নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু তা যে দেশের নয়, নিজের আচ্ছে দিন, সেটা কে জানত! তাঁর ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হতেই দেখা গেল, সাধারণ মানুষের জন্য কোনও উন্নয়নই হয়নি। ‘বিকাশ’ হয়েছে খোদ চৌকিদারেরই। শুক্রবার মনোনয়ন পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসী কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী মোদী মনোনয়নপত্রে তাঁর ব্যক্তিগত যাবতীয় তথ্য উল্লেখ করেছেন। আর সেই তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালের পর থেকে প্রায় ৫২ শতাংশ সম্পত্তি বৃদ্ধি হয়েছে তাঁর! বর্তমানে মোদীর মোট সম্পদের পরিমাণ ২.৫১ কোটি টাকা! যেখানে ২০১৪ সালের হলফনামা অনুযায়ী, তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১.৬৫ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৫১ লক্ষ টাকা, চলতি বছরে মনোনয়নপত্র দাখিলের তথ্য অনুযায়ী, তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১.৪১ কোটি টাকা। এছাড়াও তাঁর স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মনোনয়নপত্রে নির্বাচন কমিশনকে জমা দেওয়া হলফনামায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর আয়ের মূল উৎস, তাঁর বেতন এবং ব্যাঙ্কে জমানো অর্থের সুদ। এছাড়াও চলতি বছরের ৩১ মার্চের হিসাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর হাতে নগদ রয়েছে ৩৮ হাজার ৭৫০ টাকা। দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে রয়েছে মাত্র ৪,১৪৩ টাকা। তবে এসবিআই-এ যে ফিক্সড ডিপোজিট করিয়েছিলেন তিনি, সেই স্থায়ী আমানত বা এফডি বেড়ে এখন ১.২৭ কোটি টাকা। ২০ হাজার টাকার সরকারি বন্ড ও ৭.৬১ লক্ষ টাকা এনএসসি-তেও লগ্নি করেছেন মোদী।
এখানেই শেষ নয়। গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পেশ করা হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১.১৩ কোটি টাকা মূল্যের ৪টি সোনার আংটি রয়েছে তাঁর! ১.৯০ লক্ষ টাকার একটি জীবন বিমাও রয়েছে তাঁর নামে। আর পিএমও অফিসের তরফে তিনি পান ১.৪০ লক্ষ টাকা। আর গান্ধীনগরে ২০০২ সালে ১,৩০,৪৮৮ টাকায় যে বাড়ি কিনেছিলেন তিনি, বর্তমানে বাড়িটির বাজার দর ১.১০ কোটি টাকা। মোদীর হলফনামায় তাঁর এমন সম্পত্তির বহর দেখে ইতিমধ্যেই কটাক্ষ করতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। সবারই এক দাবি, দেশের নয়, নিজেরই আচ্ছে দিন এনেছেন মোদী। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও নেটিজেনদের ট্রোলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে চৌকিদারকে। মোদীর প্রতিশ্রুতি ছিল, তিনি ক্ষমতায় এলে সকলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ থেকে ২০ লক্ষ টাকা করে ঢুকবে। কিন্তু আদতে দেখা গেল, এই ৫ বছরে তাঁর নিজের অ্যাকাউন্টেই ঢুকে গেল কোটি কোটি টাকা। আর সাধারণ মানুষ পেল ক্যাঁচকলা। সত্যি সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ!