বিজেপি কেন্দ্রের সরকার গঠনের পর থেকেই উত্তরোত্তর খারাপ হয়েছে মানুষের হাল। গেরুয়া শিবির যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে তার সবকটিতেই নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে মানুষের ওপর। তার মধ্যে অন্যতম হল এনআরসি। যা নিয়ে প্রথম দিন থেকে সরব তৃণমূল-সহ দেশের সমস্ত রাজনৈতিক বিরোধীদলগুলি। তবে বিজেপি কবেই বা মানুষের জন্যে ভেবেছে? তাই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর ঘোষণার পরই ঘুম ছুটেছে চন্দ্রকোনার প্রায় ১০০ পরিবারের।
এনআরসি আতঙ্কে ভুগছে চন্দ্রকোনার প্রায় ১০০ পরিবার। তাঁদের এখন প্রধান চিন্তা কী করবেন? কোথায় যাবেন? শেষ পরিণতিই বা কী হবে?, সেই ভাবনায় জেরবার পাঁচশোর বেশি উদ্বাস্তু মানুষজন।বিডিওর দ্বারস্থ হয়েছেন পরিবারগুলি।
চন্দ্রকোনা দুই নম্বর ব্লকের বিডিও শ্বাশত প্রকাশ লাহিড়ী বলেন, ওঁদের সমস্যা অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হবে। নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় বিষয়টিতে নজর দেওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনী পর্ব শেষ হলেই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।” পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছেন চন্দ্রকোনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হীরালাল ঘোষ। তিনি বলেন, “চন্দ্রকোনার নীলগঞ্জ গ্রামে ওঁরা দীর্ঘদিন ধরেই উদ্বাস্তু হয়ে বসবাস করছেন। ওঁদের সমস্ত রকমের প্রশাসনিক সাহায্য করা হবে।”
চন্দ্রকোনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি হীরালাল ঘোষ বলেন, “বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর ঘোষণার পরই আতঙ্ক শুরু হয়েছে পরিবারগুলির। আমরা ওঁদের সবরকম সাহায্য করব বলে কথা দিয়েছি।” পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন চন্দ্রকোনার বিধায়ক ছায়া দোলই।
চন্দ্রকোনায় বসবাসকারী উদ্বাস্তু পরিবারের সদস্য তুষার সমাদ্দার বলেন, “আমার বাবা শশধর সমাদ্দার ১৯৪০ সালে যখন নদিয়ায় এসেছিলেন, তখন তাঁর বয়স ছিল তিন বছর। ১৯৬৫ সালে চন্দ্রকোনার নীলগঞ্জ গ্রামে চলে এসেছিলেন। তখন বাবাকে পাঁচ একর জমি লিজ হিসাবে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই জমির আজও রেকর্ড করা যায়নি। যদি রাজ্যে এনআরসি চালু হয় আমরা খুব সমস্যায় পড়ে যাব।”
যবে থেকে বিজেপি এনআরসি-র ঘোষণা করেছে এই চরম ভুল পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বাংলার মাটিতে কোনভাবেই এনআরসি করতে দেওয়া হবে না। কিছুদিন আগেই আসামে সভা করতে গিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেছিলেন, “ মোদী কি ভারতের ইজারাদার যে ভারতে কে থাকবেন কে থাকবেন না তা উনি ঠিক করে দেবেন? এটা কি ছেলেখেলা হচ্ছে?”