নীল-সাদা রঙে সাজানো হণ্ডা অ্যামেজ। তাতে লাগানো থরে থরে নীল-সাদা বেলুন। গাড়ির গায়ে বড় বড় করে লেখা ‘সাপোর্ট দিদি’। গাড়ির সামনের দিকে লেখা ‘আমার প্রথম ভোট’। ভেতরে বাজছে, ‘জীবনের প্রথম ভোট বাংলার পক্ষে দেবে না বিপক্ষে’। আর গাড়ির ভেতরে উৎসাহী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থকেরা স্লোগান দিচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে।
দলীয় কর্মীরা নয়। এভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচারের দায়িত্ব তুলে নিলেন তৃণমূলের উৎসাহী সমর্থক ও শুভানুধধ্যায়ীরা। আজ বৃহস্পতিবার বহরমপুরের কাশেমবাজার থেকে এই গাড়ি যাত্রা শুরু করল। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে ১৭ মে পর্যন্ত গোটা রাজ্যে ঘুরবে এই গাড়ি। পৌঁছে যাবে রাজ্যের সমস্ত বাসিন্দাদের দোরে দোরে। খোঁজ দেবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের। কেন জাতীয় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রয়োজন, সমর্থকরা জানাবেন সে কথাও।
দিনে গড়ে ৩ থেকে ৪ টি বিধানসভা এলাকায় পৌছনোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন দিদি সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীরা। প্রতি বিধানসভায় পৌঁছে সাধারণ মানুষকে জড়ো করে চলছে প্রচার। সাড়াও মিলছে ব্যাপক। রূপমের গান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ স্লোগান শুনে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন গাড়ির চারপাশে। উৎসুক জনতা জানতে চাইছেন কী ব্যাপার? জটলাই পরিণত হচ্ছে সভায়। উৎসাহী জনতার সামনে দিদি সমর্থকরা প্রশ্ন তুলছেন, কেন গুজরাতের নবম শ্রেণীর কিশোরী পাবে না ‘কন্যাশ্রী’ প্রকল্পের সুবিধা? কেন ‘সবুজ সাথী’ প্রকল্পের আওতায় সাইকেল পাবে না রাজস্থানের কিশোর? যদি গোটা দেশে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিতে হয়, কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে হয়, দেশের তরুণ প্রজন্মকে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করে তুলতে হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর কুর্শিতে চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। উপস্থিত জনতা জয়ধ্বনি তুলছেন – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ।
গাড়িতে থাকা এক দিদি সমর্থকের কথায়, ‘নরেন্দ্র মোদীর বড় বড় ডায়লগবাজি আর চলবে না। গোপালকৃষ্ণ গান্ধী, ইন্দিরা জয় সিংয়ের মতো সমাজের বিশিষ্টজন থেকে শত্রুঘ্ন সিনহা, যশবন্ত সিনহার মতো রাজনীতিবিদ হয়ে সব জাত-ধর্মের মানুষ প্রকাশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চেয়েছেন। বাংলার উন্নয়ন আমরা প্রতক্ষ্য করেছি। দিদির উন্নয়নের ওপর আমাদের আস্থা আছে। তাই আমরাও চাই মমতাদি প্রধানমন্ত্রী হোন। তাই দিদির সমর্থনে আমরা এই প্রচার শুরু করেছি’।
রাজনীতিতে অনেক রকম প্রচার দেখা গেছে। কিন্তু শুভানুধ্যায়ীদের উদ্যোগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে এমন অভিনব প্রচার বাংলার রাজনীতিতে এক অন্য মাত্রা যোগ করল সন্দেহ নেই।

(সমস্ত ছবি এবং ভিডিও ‘এখন খবর’-এর নিজস্ব)