ভাষণবাজির এক্সপ্রেস ছোটাতে গিয়ে এবার তেলে-জলে এক করে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। নির্বাচনী জনসভায় নিজের দীর্ঘ ভাষণে রবীন্দ্রনাথ থেকে শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ থেকে প্রণব মুখোপাধ্যায় – এই সমস্ত বিষয়ই রেখেছিলেন শাহ। উদ্দেশ্যে, স্থানীয় ‘সেন্টিমেন্ট’কে উস্কে দিয়ে বাংলার মানুষের মন জয়ের চেষ্টা। কিন্তু তা করতে গিয়েই তালেগোলে এবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মভূমিকেই ‘পাল্টে’ দিলেন মোদীর সেনাপতি!
সোমবার মহম্মদবাজারের গণপুরে জেলায় প্রথমবার জনসভা করতে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, বীরভূমের পবিত্র ভূমি যেখানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্ম হয়েছিল, সেই মাটিকে কোটি কোটি প্রণাম। বক্তব্যের মাঝেও একই ভুলের পুনরাবৃত্তি করেন দেশের প্রথম সারির এই নেতা। স্বাভাবিকভাবেই শাহের এই মন্তব্যে অসন্তুষ্ট শিক্ষিত সমাজ। ঠাকুর পরিবারের সদস্য তথা শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর বলেন, ওঁর শিক্ষার অভাব, তাই শিক্ষার দরকার। এ রাজনীতির অবনতিও বটে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলডও হতে হয়েছে শাহকে।
গতকাল কৃষি প্রধান বাংলায় কৃষকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প তুলে ধরার পাশাপাশি আদিবাসী ও কৃষকদের ঋণে সুদ মুকুবের কথাও তিনি বলেন। যদিও মোদী জমানায় দেশের কৃষকদের হাল কারোরই অজানা নয়। আবার বীরভূমের ভূমিপুত্র প্রণব মুখোপাধ্যায়কে যে তাঁরাই ভারতরত্ন দিয়ে সম্মান দিয়েছেন, গতকালের সভায় সে কথাও জানাতে ভোলেননি শাহ। অর্থাৎ দেশের সর্বোচ্চ পদক নিয়েও রাজনীতি করতে ছাড়েননি বিজেপি সভাপতি।
সোমবারের সভায় শাহ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, জেলা সভাপতি রামকৃষ্ণ রায় ও জেলায় দুই বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল ও রামপ্রসাদ দাস। উল্লেখ্য, সোমবার আগাগোড়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূলকে আক্রমণ করলেও সিপিএম নিয়ে একটি কথাও খরচ করেননি শাহ। যা দেখে রাজনৈতিক মহল একে রাম-বাম সমঝোতার ইঙ্গিত বলেই মনে করছে।