বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিতর্কের জেরে এবার নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘শুধরে’ নিলেন। তবে বাংলায় গেরুয়া শিবিরের ঘাঁটি শক্ত করতে মরিয়া দিলীপ ঘোষ তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দুই বার দু’রকম তথ্য দিয়েছেন। সেই কারণে এবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। গতবার বিধানসভা ভোটের সময় তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিধানসভা ভোটের সময় হলফনামায় দিলীপবাবু লিখেছিলেন, ‘ডিপ্লোমা ফ্রম ঝাড়গ্রাম পলিটেকনিক কলেজ।’ অর্থাৎ, তিনি ঝাড়গ্রাম পলিটেকনিক কলেজ থেকে পাশ করেছেন। সেই নিয়ে বিতর্ক গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। এবার নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘পাসড আইটিআই ফ্রম ঝাড়গ্রাম’। পাশে ১৯৮২ সাল উল্লেখ করা আছে। কোনও কলেজের নাম উল্লেখ করা হয়নি। সেই সঙ্গে ১৯৮৩ সালে অল ইন্ডিয়া ট্রেড টেস্ট আইটিআই টালিগঞ্জ থেকেও পাশ করার কথা জানিয়েছেন তিনি। যার উল্লেখ বিধানসভা ভোটের হলফনামায় ছিল না। অন্যদিকে, এফআইআরের সংখ্যায় ঘাটালের প্রার্থী ভারতী ঘোষকেও ছাড়িয়ে গিয়েছেন বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। ভারতীর বিরুদ্ধে রয়েছে ১১টি এফআইআর, আর দিলীপবাবুর বিরুদ্ধে এফআইআর আছে ১৪টি। হাওড়া, উত্তর দিনাজপুর, কলকাতা, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রামের মতো একাধিক জেলায় একাধিক থানায় তাঁর নামে মামলা রয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বিতর্ক এড়াতেই এবার দিলীপবাবুর শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘কমে গিয়েছে’। এব্যাপারে তিনি অবশ্য বলেন, “গতবার তথ্য ভুল লেখা হয়েছিল। এবার ঠিক করে লেখা হয়েছে। সব নথিও দেওয়া হয়েছে”। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন, “এতেই প্রমাণ হয় দিলীপবাবু সত্যি বলেন না। আরএসএস বাজারে কেমন মানুষ উপহার দিচ্ছে, সবাই দেখতে পাচ্ছে”।
দিলীপবাবু ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে হলফনামা দিয়েছিলেন। নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া সেই হলফনামায় বিজেপির রাজ্য সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। বিধানসভা ভোটের সময় দিলীপবাবু হলফনামায় জানিয়েছিলেন, ঝাড়গ্রাম পলিটেকনিক কলেজ থেকে তিনি ডিপ্লোমা করেছেন। কিন্তু ওই নামে কোনও কলেজ ঝাড়গ্রামে নেই। যদিও নির্বাচন কমিশনের কাছে এমন ভুল তথ্য দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েও শাসকদল আবারও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এর আগে ২০১৮ সালে কোনও জনপ্রতিনিধি নির্বাচন কমিশনের কাছে মিথ্যা হলফনামা জমা দিতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য।