গতবারের লোকসভা ভোটে কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের প্রায় অলআউট করে দিলেও ২০১৭-য় বিধানসভা ভোটে অনেক কষ্টে অল্প মার্জিনের ভোটেই জিততে হয়েছে বিজেপিকে। সে সময় কংগ্রেসের পাশাপাশি জিগ্নেশ মেবানি, অল্পেশ ঠাকুর এবং হার্দিক প্যাটেলের মতো তরুণ মুখরা যথেষ্ট বেগ দিয়েছে গেরুয়া শিবিরকে। শেষ মুহূর্তে নিজের রাজ্যে ভোটপ্রচারে বাড়তি সময় দিয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দলকে টেনে তুলেছেন মােদী। তবে এবার বিজেপির ওপর কৃষকদের একটা বড় অংশই অসন্তুষ্ট। আর এই অসন্তোষই চলতি লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
গুজরাতের সুরেন্দ্রনগর লোকসভা কেন্দ্রের বাস্তব চিত্র দেখে অন্তত এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। এই লোকসভা কেন্দ্রের তিন-চতুর্থাংশ এলাকাই গ্রামীন। কৃষি প্রধান এই কেন্দ্রের অধিকাংশ বাসিন্দাদের মতে, কৃষিভিত্তিক সমস্যা মেটাতে রাজ্য বা কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বিশেষ উদ্যোগী হয়নি। যার ফলে অনেকেই এখন কংগ্রেসের দিকে ঝুঁকছেন। ২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ইভিএমে তার প্রভাবও দেখা গিয়েছিল। এবারেও সেই আবেগ উস্কে দিয়ে বিজেপিকে চাপে ফেলতে মরিয়া বিরোধীরা।
২০১৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সুরেন্দ্রনগর লোকসভার অন্তর্গত সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছ’টি কেন্দ্রেই জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। শুধুমাত্র ওয়াধান কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। মূলত শহুরে ভোটারদের পাশে পেয়েই এই কেন্দ্রে জিতেছিল বিজেপি। এর আগে, ২০১২ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সাতটির মধ্যে ছ’টি আসনেই জয়ী হয়েছিল গেরুয়া শিবির। কিন্তু গত বিধানসভা নির্বাচনে পাটীদার আন্দোলনের কারণেই বদলে যায় রাজনীতির সমীকরণ। হার্দিক প্যাটেলের আন্দোলনকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় পাটীদার ও কোলি সম্প্রদায়ের ভোটব্যাঙ্কে ভাগ বসায় কংগ্রেস।
সুরেন্দ্রনগর সংলগ্ন লাখতার গ্রামের বাসিন্দা হাসমুখ প্যাটেল। পেশায় কৃষক। তিনি বলেন, ‘শস্যবিমার জন্য আমরা পাঁচ হাজার টাকা করে কিস্তি দিয়েছিলাম। কিন্তু ফসল না হওয়ায় আমরা ক্ষতিপূরণ বাবদ মাত্র ছ’হাজার টাকা পাই। আমাদের আয় তো দ্বিগুণ হয়নি, তার বদলে সরকার আমাদের থেকেই টাকা নিয়েছে।’ তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ২০১৭ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পাতিদার আন্দোলনের সময় শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে সকলে একজোট হয়ে কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছিলাম। মোদী সরকার কৃষকদের অনেক প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে তার কিছুই প্রায় পূরণ হয়নি। এবারও আমরা বিজেপির বিরুদ্ধেই ভোট দেব।