জিএসটি এবং নোটবন্দী নিয়ে প্রবল ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। গত আড়াই বছর ধরে এই নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ জানিয়েছেন তাঁরা। এবার সেই ক্ষতে মলম দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা চালালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দু’দফার নির্বাচনেই বুঝতে পেরেছেন, ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের আঁচ পড়ছে ভোট বাক্সে। তাই আর দেরি না করে ব্যবসায়ীদের মুখোমুখি হন প্রধানমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, ব্যবসায়ীদের মন জয়ের মরিয়া চেষ্টা চালিয়ে মোদী স্বীকার করে নিলেন কিছু ‘ভুল’ হয়েছে। যা দেখে বিরোধীদের দাবি, দু’দফার ভোটের পড়েই মোদী বুঝেছেন পায়ের তলার মাটি ক্রমশ সরছে। তাই ব্যবসায়ীদের ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর একটা মরিয়া চেষ্টা করলেন মোদী।
নোট বন্দী ও জিএসটি-র ধাক্কায় ব্যবসা হারিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স-সহ দেশের নানা প্রান্তে ব্যবসায়ীদের ছোট-বড় সংগঠন এ নিয়ে মুখ খুলেছিল। মোদীর রাজ্যের সুরাতেই ধর্মঘট ডাকেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ক্ষোভ ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলতে পারে আঁচ করেই দিল্লীর তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মোদী বৈঠকে বসেছিলেন বলে রাজনৈতিক মহলের বড় অংশের অভিমত। সেখানেই মোদী বলেন, ‘কোনও ভুল হয়নি, তা আমি বলছি না। কিন্তু কোনও ত্রুটি থাকলে ব্যবসায়ীদের পরামর্শ মেনে দ্রুত তার সমাধান করা হয়েছে’।
তবে এমন মরিয়া চেষ্টার পরও লাভ কতটা হল তা নিয়ে সংশয়ে খোদ ব্যবসায়ীরাই। কারণ নোটবন্দী ও জিএসটি-র ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছোট ব্যবসায়ীরা। এই বৈঠকে মোদী তাঁদের আশ্বাস দিয়ে জানান, ছোট দোকানিদের জন্য পেনশন প্রকল্প চালু করতে বিশেষ পর্ষদ তৈরি হবে। এবং বন্ধক ছাড়াই ব্যবসায়ীরা ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। কিন্তু মোদীর এই আশ্বাসবাক্যে বিশ্বাস রাখতে পারছেন না ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা। ছোট ও মাঝারি শিল্পের জন্য এমন বন্ধকহীন ঋণের আশ্বাস দেওয়া হলেও সহজে তা মেলে না বলেই তাঁদের অভিযোগ। ফলে ব্যবসায়ীদের মন পাওয়ার মরিয়া চেষ্টা মোদী চালালেও তা মাঠে মারা গেল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের বড় অংশ।
