বিজেপির সাম্প্রদায়িক হিংসা ও ধর্ম নিয়ে বিভাজনের রাজনীতির বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে শুক্রবার বালুরঘাটের জনসভা থেকে তীব্র শ্লেষের সঙ্গে মমতা বলেন, ‘এখন প্রধানমন্ত্রী আর বিজেপি নেতাদের সবাই ভয় পান৷ ভাবেন, এই না দাঙ্গা বাঁধিয়ে দেয়৷ বলছে, বাংলা, ওড়িশা দখল করব৷ এই দু জায়গা দখল করে কী হবে? অন্যত্র তো বিজেপি শূন্য পাবে৷ তাহলে কীভাবে ক্ষমতায় ফিরবে’?
এদিন বেলা দেড়টা নাগাদ বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে সভা করতে ওঠেন দলের সুপ্রিমো৷ সেখান থেকেই জনগণের উদ্দেশে আহ্বান জানান, ‘তৃণমূলকে একেকটি ভোট দেবেন, একেকটি চড় পড়বে বিজেপি নেতাদের গালে৷ আর সেটাই হবে নোটবন্দী, কর্মসংস্থান হারানো, বেকারত্ব বৃদ্ধির বিরুদ্ধে যথাযথ প্রতিবাদ৷’ অর্পিতা ঘোষকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অর্পিতার বিরুদ্ধে অনেকে অনেক কথা বলছে৷ ওকে ভুল বুঝবেন না৷ ও লড়াকু মেয়ে৷ এখানে কাজ করতে এসে খুব বড় বিপদের মুখে পড়েছিল৷ সেখান থেকে বেঁচে ফিরেছে৷ আপনারা ওকে আবার ফিরিয়ে আনুন৷ নাটক, সংস্কৃতি জগতের সঙ্গে ও জড়িত এবং ভাল কাজও করেছে৷ অনেকদিন ধরে বলছে, বালুরঘাটে রবীন্দ্রভবন করে দিতে৷ এনিয়ে আমার সঙ্গে ঝগড়াও করে৷’
এদিনের প্রচার সভা থেকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে মমতা বলেন, ‘এবার আঞ্চলিক দলগুলির ফলাফল দেখে বিজেপি টের পাবে তাদের ক্ষমতা কতখানি৷ আগেও তৃণমূল সুপ্রিমো আত্মপ্রত্যয়ের সুরে জানিয়েছিলেন, দিল্লীতে আগামী সরকার গড়তে তৃণমূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে’৷ এদিন পুলওয়ামায় জঙ্গী–হামলা নিয়েও মুখ খোলেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘এই ধরনের ঘটনা আগাম সতর্কতার বার্তা সত্ত্বেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হল না? কেন জওয়ানদের শহিদ হতে হল? প্রচার করা হচ্ছে, মোদী সেনা। আমরা সকলেই জওয়ানদের শ্রদ্ধা করি। তাঁরা আমাদের দেশের সম্পদ। জওয়ানরা সকলের’।
কংগ্রেস-বিজেপি-সিপিএমকে একযোগে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘এরা এখন একসঙ্গে কাজ করছে। সিপিএমের একাংশ বিজেপিকে সমর্থন করছে। কংগ্রেসের দুই প্রার্থী আরএসএস, বিজেপির সাহায্য নিয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করছে। বাংলায় বিজেপি কোনওদিনই ক্ষমতায় আসবে না’। পাশাপাশি রাজ্যের সাফল্য তুলে ধরে মমতা বলেন, ‘বাংলায় কৃষকদের আয় বেড়েছে। সমস্ত ক্ষেত্রে বাংলা এখন ভারতে এক নম্বর স্থানে রয়েছে। আর গুজরাত
নিয়ে মিথ্যে প্রচার করা হচ্ছে। নোটবন্দীর ফলে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হয়েছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা আসেনি। এটা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই নয়। ৫ বছরে মোদি সরকার ব্যর্থ।