তাঁর ‘অভিশাপেই’ মৃত্যু হয়েছে ২৬/১১ মুম্বইয়ের জঙ্গি হামলায় শহীদ হওয়া তৎকালীন অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডের (এটিএস) প্রধান হেমন্ত কারকারের। বক্তা অন্য কেউ নন স্বয়ং মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর। সদ্য তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন এবং ভোপালের প্রার্থী পদেও মনোনীত হয়েছেন তিনি। আর তারপরই তাঁর এই বিস্ফোরক মন্তব্য। যা ঘিরে তৈরি হয়েছে জোর বিতর্ক।
প্রসঙ্গত, হেমন্ত কারকারের সঙ্গে সাধ্বী প্রজ্ঞার ‘সম্পর্ক’ যে ভালো ছিল না তা পুলিশ মহলে অজানা নয়। ২০০৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর মালেগাঁও বিস্ফোরণের তদন্ত করেছিলেন হেমন্ত কারকারে। সাধ্বী প্রজ্ঞা, লেফটেন্যান্ট কর্নেল শ্রীকান্ত পুরোহিত-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণে ষড়যন্ত্রের চার্জশিট দিয়েছিলেন মুম্বই পুলিশের তৎকালীন এটিএস প্রধান কারকারে। তার ভিত্তিতেই সাধ্বী-সহ অভিযুক্তরা গ্রেফতার হন।
আর সেই পুরোনো প্রসঙ্গ তুলেই নিজের বক্তব্য রাখেন সাধ্বী। তাঁর বক্তব্যতে সাময়িক প্রশংসা পেলেও পরে নিন্দিত হন তিনি। তাঁর বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লেই তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। নানা মহল থেকে কুৎসার ঝড় ওঠে আর তাতেই দিশাহার হয়ে পড়ে গেরুয়া শিবির। কেউ বলছেন, ‘পাকিস্তানই আপনার ভাবনা বুঝতে পারে।’ টুইটারে #রিমুভসাধ্বীপ্রজ্ঞা নামে আন্দোলন শুরুর ডাক দেওয়া হয়েছে এবং তাতে অনেকে সমর্থনও করেছেন।
উল্লেখ্য সাধ্বী এইদিন তাঁর বক্তব্যতে বলেন, “তদন্তকারী দল হেমন্ত কারকারেকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে বলে, প্রমাণ না পেলে ওঁকে (সাধ্বী) ছেড়ে দিন। কিন্তু কারকারে বলেছিলেন, ‘ওঁর বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করতে আমি সব কিছু করব। কিন্তু ওঁকে ছাড়ব না।’ এটা ছিল ওঁর হিংসা। উনি ছিলেন দেশদ্রোহী, ধর্মবিরোধী।’’ এর পর জনতার উদ্দেশে সাধ্বী বলেন, ‘‘আপনারা বিশ্বাস করবেন না। কিন্তু আমি বলেছিলাম তোর সর্বনাশ হবে। তার সোয়া মাসের মধ্যেই জঙ্গিরা তাঁকে হত্যা করে।”
কোনো নেতা-নেত্রী এই বিষয়ে মুখ না খুললেও সাধারণ মানুষদের মধ্যে প্রবল প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে ইতিমধ্যে। সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়তে গিয়ে শহিদ এক সাহসী পুলিশ অফিসারের সম্পর্কে এই রকম মন্তব্য করা কতটা শিষ্টাচারের পরিচায়ক, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ফলে বেশ বেকায়দায় পড়েছে পদ্ম শিবির।