সোনায় মোড়া বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ।
সোনা প্রতারণা মামলায় নাম জড়ানোর পর থেকেই জল্পনা ছিল, কত সোনা থাকতে পারে ভারতীর জিম্মায়? দক্ষিণ কলকাতার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভারতীর দু’টি লকার থেকে ১,১০০ গ্রাম সোনা বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। ভারতী সেই সময় দাবি করেছিলেন, ওই গয়না তাঁর এবং তাঁর স্বামীর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। সেই সময় থেকে জল্পনা আরও বেড়েছিল। সবার মনে একটাই প্রশ্ন, সোনা আছে কত শুনি! অবশেষে জবাব মিলল, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে।
জানা যাচ্ছে, বিজেপি প্রার্থী ভারতী মনোনয়নের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁর নিজের কাছে রয়েছে প্রায় ৯১ ভরি (১,০৬১.৪২ গ্রাম) সোনা, যার মূল্য ৩২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৭০ টাকা। আর তাঁর স্বামী এমএভি রাজুর কাছে সোনা রয়েছে প্রায় ৬০ ভরি (৬৯৯.৮৪ গ্রাম), অর্থমূল্য ২১ লক্ষ ৩৪ হাজার ২০০ টাকা।
হলফনামায় ভারতী আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্থাবর সম্পত্তি ৭ কোটি ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৭৮ টাকার, অস্থাবর সম্পত্তি ২ কোটি ৫৮ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৫৮ টাকার। ভারতীর স্বামীর স্থাবর সম্পত্তি ৫ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৬০ টাকার, অস্থাবর সম্পত্তি ৩ কোটি ১১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭৯১ টাকার। ভারতীর কাছে নগদ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা ও রাজুর কাছে নগদ ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, নোটবন্দীর সময় সোনা-প্রতারণার মামলায় নাম জড়ানোর পরেই ভূমিকা বদল হয়েছে জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতীর। পুলিশের চাকরি ছেড়েছেন, দীর্ঘ দিন আত্মগোপন করে থাকার পরে এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। সোনা প্রতারণার মামলাতেই ভারতীর বাড়ি, তাঁর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিআইডি। ভারতীর মাদুরদহের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা ও সোনার গয়না ট্রাঙ্কে করে নিয়ে গিয়েছিলেন সিআইডি অফিসারেরা। ভারতীর কত সোনা, জল্পনা শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। এতদিনে সেই রহস্যের কিছুটা উন্মোচিত হল।
তবে ভারতী হলফনামায় সোনা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য জানাননি বলেও অভিযোগ করছেন অনেকে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি ভারতীকে বিঁধে বলেন, ‘উনি কী হিসাব দিয়েছেন সেটা বড় কথা নয়। দাসপুর, মেদিনীপুর, খড়্গপুরের বহু সোনাওয়ালা ওকে খুঁজছেন। উনি সোনা মামলাতেই ফাঁসবেন’।