গত ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়ে গেছে সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন। গতবারের মতো এবার আর ‘মোদী লহর’ তো নেই, বরপং গোটা দেশ জুড়েই এখন বইছে প্রবল বিজেপি বিরোধী হাওয়া। তাই ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে এই মুহূর্তে প্রায় সারা দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় প্রচার সভা করেছেন তিনি। করবেন আরও বেশ কয়েকটি জায়গায়। তবে মোদীর সভা নিয়ে এবার উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর খবর। অতীতে বারাণসীতে নিজের লোকসভা কেন্দ্রেই ছিল তাঁর এক সভা। আর তাতেই নষ্ট হয়ে গেছিল কৃষকদের বিপুল ফসল। এই ঘটনার সাক্ষী হিসাবে রয়েছে বারাণসীর কাছার গ্রামের কৃষক ছামেলা দেবী।
৬০ বছর বয়সের এই কৃষক রমণী চোখের জল ফেলে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের জন্য এখানে তৈরি হচ্ছে দুটি হেলিপ্যাড। তার জন্য আমার জমির ফসল নষ্ট করা হয়েছে। আমাদের সবাইকেই বলা হয়েছিল এই জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। তাই আমরা আমাদের জমির ফসল ফেরত চাই।’ এখানেই শেষ নয়। জল আরও অনেক দূর গড়িয়েছে। এই কৃষক রমণী অভিযোগ করেন, ‘এখানে প্রধানমন্ত্রী এসে সভা করেন। লম্বা ভাষণও দেন। তারপর তিনি হেলিকপ্টার করে চলে যান। কিন্তু আমাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি। উলটে আমাদের জমি থেকে ইট তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যখন আমার ছেলে এই কাজে প্রতিবাদ জানায়, তখন তাকে মারা হয়। ফলে একদিকে আমার ফসলও নষ্ট হল। আবার জমিটাও ধ্বংস হল।’
উল্লেখ্য, এই ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৮ সালের ১৪ জুলাই। সএ সময় মোদীর সভার জন্য তিনটি হেলিপ্যাড তৈরি করা হয়েছিল। এক হাজার মানুষ বসার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যে জমির ওপর এইসব করা হয়েছিল তা গ্রামের কৃষকদের জমি। প্রায় ১০ জন কৃষকের জমি নিয়ে এই কাজ করা হয়েছিল। যারা আজ চোখের জল ফেলছেন। বছর ৬৫ বয়স কৃষক গিরিজার। তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের ফসল তৈরি ছিল। তখনও আমরা ফসল তুলিনি। সবজি ফলেছিল কত। সব নষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। ক্ষতিপূরণ দেবে বলে তা-ও দেওয়া হয়নি। কীভাবে একজন প্রধানমন্ত্রী এমন কাজ করতে পারে? তিনি কী আমাদের জন্য কাজ করেন? এই কৃষির কাজ করতে গিয়ে ঋণ নিতে হয়েছে। এখন তা মাথার ওপর ধার হয়ে রয়েছে।’ ভোট মরশুমে এই খবর সামনে আসতেই নতুন করে আবারও সমালোচনার মুখে পড়েছেন ‘দেশের চৌকিদার’।