বিগত ৮ বছরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একাধিক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে বাংলা। একদিকে কন্যাশ্রী, উৎকর্ষ বাংলা, সবুজসাথীর মতো প্রকল্পগুলি যেমন পেয়েছে আন্তর্জাতিক সাফল্য, তেমনি কেন্দ্রীয় রিপোর্টে ১০০ দিনের কাজে পরপর তিনবার বাংলার মুকুটে উঠেছে সেরার শিরোপা। আর সম্প্রতি এক রিপোর্টে তো এই তথ্যও উঠে এসেছে যে, গোটা দেশে গড় বেকারত্বের হার যখন ৬.১ শতাংশ, তখন বাংলায় বেকারত্বের হার তার তুলনায় অনেকটাই কম। মাত্র ৪.৬ শতাংশ। শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্টে দেখা গেছে হরিয়ানা, আসাম, বিহারের মতো রাজ্যগুলিতে বেকারত্বের হার অনেকটাই বেশি। যার অর্থ, গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এ রাজ্যেই। কিন্তু এরপরেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিজেপি সভাপতি অমিত শাহরা অভিযোগ করেন এ রাজ্যে নাকি কর্মসংস্থান নেই!
এ নিয়েই এবার মুখ খুললেন তৃণমূলের জাতীয় মুখ্যপাত্র তথা রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি ‘আউটসাইড পার্লামেন্ট’ নামে একটি ক্যাম্পেন শুরু করেছেন তিনি। তারই একটি ভিডিওতে বাংলার কর্মসংস্থান নিয়ে বিস্তারিত তথ্য দিতে দেখা গেল ডেরেককে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ অঞ্চলে দাঁড়িয়ে রয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর পিছনে আকাশছোঁয়া বিল্ডিংয়ের সারি। কলকাতার তথ্যপ্রযুক্তি তালুকে দাঁড়িয়ে ডেরেক জানান, ‘এটা সল্টলেকের সেক্টর ফাইভ, যেখানে আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি। অনেক অনেক বিল্ডিং এখানে। তথ্য বলছে, শেষ কয়েক বছরে টিসিএস-এর সৌজন্যে ৪০০০০ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে বাংলায়। উইপ্রোতে চাকরি হয়েছে ১০০০০ মানুষের এবং কংনিজেন্ট-এ ২০০০০। এছাড়া আইবিএম-এ ১৫০০০ কর্মসংস্থান হয়েছে। বাংলায় চাকরির অভাব নেই। মোট ৯০০ সফটওয়্যার সংস্থা রয়েছে এখানে।’
এর ঠিক পরেই ভিডিওয় দেখা যায়, মোদী-শাহ জুটিকে কটাক্ষ করে ডেরেক বলছেন, ‘কর্মসংস্থান বা চাকরি জনগণের কাছে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু ইদানীং কালে কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে মুখ খুলতে দেখা যাচ্ছে না নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহদের। প্রচারে গিয়েও এই ইস্যুতে তাঁরা চুপই থাকছেন তাঁরা।’ ডেরেকের এই ভিডিওটি পোস্টের সঙ্গে সঙ্গেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তা ভাইরাল হয়ে গেছে। লাইক, শেয়ার করার পাশাপাশি এ প্রসঙ্গে নিজেদের মন্তব্যও জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। সকলেই একবাক্যে স্বীকার করছেন যে বাংলায় চাকরির অভাব নেই। বরং মোদীর দেওয়া বছরে দু’কোটি নতুন কর্মসংস্থান তৈরির প্রতিশ্রুতিই আসলে জুমলা ছিল। কারণ দু’কোটি চাকরি তো হয়ইনি, বরং দেখা গেছে, মোদী জমানায় চাকরি হারিয়েছেন দেশের বহু মানুষ। কর্মসংস্থান তৈরির স্বপ্ন ফেরি করেই ৫ বছর আগে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোদী। কিন্তু ৫ বছর পর দেখা যাচ্ছে, সেই মিথ্যে প্রতিশ্রুতিই এখন গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে তাঁর। ভোট মরশুমে ডেরেকের এই ভিডিও যে মোদী-সহ গোটা বিজেপি শিবিরের অস্বস্তি আরও খানিকটা বাড়িয়ে দিল, তা বলাই বাহুল্য।