বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের জন্যেই নিয়োজিত করেছেন নিজেকে। তাই বাংলা তথা মানুষের উন্নয়নের কাজে রোদ-ঝড়-বৃষ্টি কোনওকিছুই প্রাধান্য পায় না তাঁর কাছে। তাঁর সৈনিকেরাও তাঁরই মতন। জনসংযোগের জন্যে সবকিছু উপেক্ষা করেন তাঁরা। তীব্র গরমের মধ্যে বৃহস্পতিবার ছাতনায় চুটিয়ে প্রচার করলেন বাঁকুড়ার তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত মুখোপাধ্যায়।
সুব্রত বলেন, “এদিন ছাতনায় আমি ভালো সাড়া পেয়েছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের রোড শোয়ে অংশগ্রহণ করেছে। এদিনের জনসভায় আদিবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণ ছিল ব্যাপক। মানুষ আর বিজেপির ভুয়ো প্রতিশ্রুতিতে ভুলবেন না। ছাতনায় জয়ের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী”।
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর তথা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য অরূপ চক্রবর্তী বলেন, “সভাধিপতি থাকাকালীন আমি ছাতনায় শতাধিক আদিবাসী লোকশিল্পীর দল তৈরি করি। তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার শিল্পীদের নানা সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছে। ফলে আদিবাসীরা আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। এদিন আমরা শিল্পীদের নিয়ে ছাতনার চাকলতোড়ে একটি জনসভা করি। আগামী নির্বাচনে ছাতনায় আমরা ‘লিড’ পাব”।
ছাতনা ব্লকের অন্তর্গত ভগবানপুর, হরিগ্রাম, শালুনি, কমলপুর সহ একাধিক গ্রামে সুব্রতবাবু রোড শো করেন। হাঁসফাঁস গরমকে উপেক্ষা করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা প্রার্থীর হয়ে এদিন জোর কদমে প্রচার করেন। সুব্রতবাবুর সঙ্গে এদিনের প্রচারে বাঁকুড়া জেলা পরিষদের মেন্টর তথা জেলা তৃণমূল কোর কমিটির সদস্য অরূপ চক্রবর্তী, জেলা পরিষদ সভাধিপতি মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শিবাজি বন্দ্যোপাধ্যায়, ছাতনা ব্লক তৃণমূল সভাপতি পরমেশ্বর কুণ্ডু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিন প্রার্থীকে দেখার জন্য গ্রামের রাস্তার পাশে আট থেকে আশি সকলে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিলেন। মহিলারা ফুল দিয়ে সুব্রতবাবুকে এলাকায় স্বাগত জানান। অনেকে শঙ্খ ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে তৃণমূল প্রার্থীকে বরণ করেন। রোড শো শেষে ছাতনায় আদিবাসী শিল্পীদের নিয়ে একটি জনসভা হয়।
অন্যদিকে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা ওন্দার সান্তোর এবং নিকুঞ্জপুর এলাকায় প্রচার করেন। আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার ডোঙ্গল মোড় থেকে রোড শো করেন। এদিন তিনি হুড খোলা জিপে দলীয় নেতৃত্বদের নিয়ে ভোট প্রচার করেন। গৌরহাটি-১ ও ২ অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে তিনি ঘুরেছেন। গোঘাটের নকুণ্ডায় তৃণমূলের কর্মিসভায় যোগ দেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না। তাঁর সঙ্গে এদিন সেখানে ছিলেন গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার-সহ অন্যান্যরা।
এই কর্মীসভায় বেচারামবাবু রাজ্য সরকারের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের সরকার চাষিদের একটু চোখের জল পড়তে দেয়নি। কারও অভাবের তাড়নায় মৃত্যু হয়নি”।
এদিন বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারকে নোটবন্দি, জিএসটি নিয়েও কটাক্ষ করেন বেচারামবাবু। বাংলার ৬৫ হাজার যুবক কাজ হারিয়ে বাড়ি চলে এসেছেন বলে তিনি জানান। দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধি ও পুলওয়ামা ঘটনা নিয়েও তিনি নরেন্দ্র মোদিকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, “এখন সিপিএম আর বিজেপি এক সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লির পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৃণমূল প্রার্থীকে বেশি ভোটে জয়ী করুন”।