প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারবারই এই দাবি করেছেন যে পুলওয়ামার ঘটনার কড়া জবাব ছিল বালাকোটের এয়ার স্ট্রাইক।
কিন্তু পাকিস্তানের বালাকোটে ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানহানায় যে মৃত্যু হয়নি কোনও পাক নাগরিকের, এমনকি নিহত হননি কোনও পাকসেনাও, বৃহস্পতিবারই তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন বিদেশমন্ত্রী তথা বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজ।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফ কনভয়ে জইশের আত্মঘাতী বিস্ফোরণের শহিদ হন ৪৪ জন সিআরপিএফ জওয়ান। সেই হামলার বদলা নিতেই ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানের বালাকোটে জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণ শিবিরের ওপর বিমান হামলা চালায় ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপর মোদী সরকার বালাকোটে শিবির গুঁড়িয়ে জইশ জঙ্গী মেরেছে বলে দাবি করলেও, বিশ্বের তাবড় তাবড় সংবাদ সংস্থাগুলি ভারতীয় বায়ুসেনার সাফল্য নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করে। উপগ্রহ চিত্র দেখিয়ে দাবি করা হয়, জইশ ঘাঁটিগুলি এখনও অক্ষত রয়েছে। ভারতের নিশানা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে।
এরপরই বিরোধীরা সরব হয়ে ওঠে। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে অন্যান্য বিরোধী নেতারা চেপে ধরেন মোদীকে। তবে গতকাল সুষমা জানান, আমরা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে এটা বোঝাতে পেরেছি, নিজেদের আত্মসুরক্ষার প্রশ্নেই বালাকোটে অভিযান চালাতে হয়েছে। বায়ুসেনার আঘাত ছিল আত্মপ্রতিরক্ষার জন্য৷ তবে বায়ুসেনাকে বলে দেওয়া হয়েছিল, জইশ শিবিরকেই নিশানা বানাতে। যদিও বালাকোটের হামলায় জইশ-ই-মহম্মদের আদৌ কোনও জঙ্গী মারা পড়েছে কি না, সে প্রসঙ্গ থেকে শত হস্ত দূরে থেকেছেন তিনি।
তাঁর কথায়, ‘আন্তর্জাতিক মহলকে আমরা জানিয়েছি সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশই দেওয়া ছিল আঘাতের সময় যেন তা পাক নাগরিক অথবা কোনও যোদ্ধার কোনও ক্ষতি না হয়৷’ তিনি আরও বলেন যে, ‘সেনাকে বলাই ছিল তাদের লক্ষ্য হল জৈশ-ই- মহম্মদের শিবির যারা পুলওয়ামা আঘাতের জন্য দায়ি এবং সেনা সেটাই করেছে কোনও রকম পাক নাগরিক অথবা যোদ্ধার ক্ষতি না করে৷’ সুষমা দাবি করেছেন যে, এর ফলে নাকি আন্তর্জাতিক মহল ভারতকে সমর্থনই করেছেন৷ যদিও আসল সত্যিটা সকলেই জানেন যে, বালাকোটের ঘটনার পর বিবিসি, আল জাজিরা, রয়টার্সের মতো আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলির প্রতিবেদনে কীভাবে তুলোধোনা করা হয়েছিল কেন্দ্র এবং ভারতীয় মিডিয়াকে।