বুধবার রাতেই শেষ উড়ান উড়ল জেটের। পুঁজির অভাবে জেট তার দুই ডানা গুটিয়ে নিয়েছে। এই জেট সমস্যার সমাধানে মোদী সরকারের কাছে সাহায্য চাইলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি মোদী সরকার। বৃহস্পতিবার ঋণদাতারা জানান, কেবল মাত্র নিলামের মাধ্যমেই এই সংস্থাকে বাঁচানো সম্ভব। ঋণদাতাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জেটকে বাঁচানোর সবচেয়ে ভালো উপায় নিলাম প্রক্রিয়া। এর সাফল্য ও ভালো দর পাওয়ার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী’। জেট বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে শেয়ার দরেও। এই অবস্থায় দু’টি বিষয় উদ্বেগ বড়িয়েছে বিমান মন্ত্রকের। জেট পরিষেবা বন্ধ হবার ফলে বিমানের সংখ্যা অনেক কমে গেছে আর বিমানের টিকিটের দাম অনেক বেড়ে গেছে।
এদিকে যে সমস্ত যাত্রী আগেই জেটের আন্তর্জাতিক উড়ানের টিকিট কেটেছিলেন তাঁদের জন্য বিশেষ ভাড়ার সুবিধা করেছে এয়ার-ইন্ডিয়া। মূল্যায়ণ সংস্থা ইক্রার তথ্য অনুযায়ী, সেপ্টেম্বর থেকেই ধীরে ধীরে প্রকট হচ্ছে এই সমস্যা। টিকিটের দাম বেড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ।
ডিসেম্বর পর্যন্ত রোজ ১২৩টি বিমান নিয়ে ৬০০-র বেশি উড়ান চালাত জেট। কিন্তু, সেই সংস্থারই বহু কর্মী গত দুই থেকে চার মাস বেতন পাননি। এই সঙ্কট সম্পর্কে জেট কর্তৃপক্ষ তাঁদের অন্ধকারে রেখেছিল বলে কর্মচারীদের তীব্র অভিযোগ। কর্মী সংগঠনের নেতা চৈতন্য মাইনকর বলেছেন, ‘ম্যানেজমেন্ট আমাদের কখনও সঠিক চিত্র জানাননি।’ জেট সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের আবেদন করেছেন জেট পাইলটরা। কিন্তু মোদী সরকার কোনোরকম সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। উড়ান সংস্থাটির পরিষেবা বন্ধ হওয়ার পর জেট পাইলটদের সংগঠন ন্যাশনাল অ্যাভিয়েটর্স গিল্ড-এর সহ-সভাপতি ক্যাপ্টেন অসীম ভালিয়ানির মন্তব্য, “অবশেষে এখন আমরা চাকরি নিয়ে উদ্বেগের কথা শুনছি। আমি গত ২৩ বছর ধরে জেটে রয়েছি। আমি জানি না আমার সহকর্মী পাইলটদের কী বলব”।
বুধবার জেটের শেষ বিমান (বোয়িং ৭৩৭) বুধবার রাত ১০টা ২৪ মিনিটে অমৃতসর থেকে উড়ে মুম্বইতে নামে রাত ১২টা ২২-এ। ওই উড়ানের অন্যতম যাত্রী লুধিয়ানার ব্যবসায়ী অমরজিৎ সিং বলেন, “আমি সাধারণত জেটেই যাতায়াত করি। বুধবার রাতে যখন অমৃতসরে উড়ানে উঠলাম, তখন আমাদের জানানো হয়, এটাই জেটের শেষ উড়ান”। প্রায় ২৬ বছর জেট এয়ারওয়েজেই রয়েছেন ভজা। সংস্থাটির জন্মের দিন থেকে। ভজার মতো জেটের অনেক কর্মচারীই তাঁদের কর্মজীবনে এরকম চড়াই-উৎরাই দেখেছেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তাঁদের বিশ্বাস ছিল, এবারও ঘুরে দাঁড়াবে জেট। কিন্তু, সব বদলে যায় বুধবার। বুধবার রাতেই জেট এয়ারওয়েজের শেষ উড়ান চলবে, সরকারিভাবে সংস্থাটি এই খবর জানিয়ে দেওয়ার পর কর্মীদের মাথায় হাত।