গত ১০ মার্চ ভোট ঘোষণার পর থেকেই দেশ জুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছিল বিজেপির জুলুমবাজি। ১১ এপ্রিল লোকসভা নির্বাচন শুরু হওয়ার পর তা এখন মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। দিলীপ ঘোষ, অমিত শাহ, আলুওয়ালিয়ার পর এবার বিজেপি হুমকি দিয়ে বিজেপির সন্ত্রাসের রাজনীতির ধারা বজায় রাখলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিং। এদিন আমতার জনসভা থেকে রাজ্যের শাসকদলের উদ্দেশ্যে তাঁর হুমকি, ‘জিতলে দেখে নেব।’
আজ হাওড়ার আমতায় নির্বাচনী জনসভা করেন রাজনাথ সিং। সেখানে তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমে সিপিএম রাজনৈতিক হিংসা ছড়াত। এখন তৃণমূল তা করছে। বামপন্থীরা বাঙালিদের ধোঁকা দিয়েছিল। এখন তৃণমূলও ধোঁকা দিচ্ছে।’ এরপরেই তাঁর হুমকি, ‘ভোটে জিতলে দেখে নেব কে আমাদের কর্মীদের গায়ে হাত দেয়। ভয় পাবেন না। পদ্ময় ভোট দিয়ে বিজেপিকে জেতান।’
উলুবেড়িয়ার বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থনে তিনি বলেন, ‘জয় ডায়নামিক লিডার। ও ফিল্মের হিরো। এখানেও হিরো হবে। পদ্ম চিহ্নে ভোট দিন।’ তবে এদিন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে ভুয়ো অভিযোগ করেন রাজনাথ। তিনি বলেন, ‘মমতা রাজ্যে ৫৫ হাজার শিল্প খোলার কথা বলেছিলেন। কিন্তু, তিনি তা পারেননি।’
কিন্তু আদতে দেখা গেছে মমতার আমলেই খোলনলচে বদলে গেছে বাংলার শিল্পের হাল। শিল্পে ঢের পিছিয়ে বাংলা, বাম আমলের এমন অপবাদ এখন অনেকটাই ঘুচেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি বরাবরই জোর দিয়েছেন ছোট ও মাঝারি শিল্পে। বৃদ্ধি পেয়েছে কর্মসংস্থানও। ছোট শিল্পের দিক থেকে তালিকায় দেশের মধ্যে একদম ওপরের দিকেই আছে বাংলা।
এমনকি খোদ কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক গোটা দেশের প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের যে তথ্য প্রকাশ করেছে, তাতে দেখা গ্রছে, দু’বছরেরও কম সময়ে বিদেশি বিনিয়োগের অঙ্ক ২৫ গুণ বেড়ে বাংলায় আসা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এখন প্রায় ৮ হাজার ১২১ কোটি টাকা। ফলে রাজনাথের অভিযোগ কোনও ভাবেই খাটে না।
উল্লেখ্য, ভোট চলাকালীন শুধু রাজনাথই নয়, এর আগে তৃণমূলকে হুমকি দিয়েছেন অমিত শাহ, মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়রাও। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আবার তৃণমূল কর্মীদের খুনের হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, ‘তৃণমূল কর্মীদের ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেব আমি।’ ফলে এ রাজ্যে দফায় দফায় ভোটদানের পাশাপাশি চলছে বিজেপি নেতাদের তরফে হুমকি দান পর্বও।