দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে তিরস্কৃত হলেন বিজেপি যুব মোর্চা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাথা কেটে নেওয়ার ফতেয়া দিয়েছিলেন বিজেপি যুব মোর্চা নেতা যোগেশ ভার্সনে। আর সে নিয়ে তোলপাড় হয়ে গিয়েছিল জাতীয় রাজনীতি। মামলাও করা হয় তাঁর বিরুদ্ধে। তখনই তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে তাঁর শাস্তি রদের আর্জিও জানিয়েছিলেন এই নেতা। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত এই উদ্ধত মেনে নেন নি। বৃহস্পতিবার তাঁর সেই আবেদন সরাসরি খারিজ করে দেয় আদালত। সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে বলা হয় যে মাথা কাটার হুমকি দেওয়ার সাহস যখন রয়েছে, আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখিও হতে হবে।
এইদিন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেইখানেই এই নেতার আবেদন রাখেন তাঁর আইনজীবী। কিন্তু বিচারপতিরা উপস্থিত আইনজীবীকে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে বলেন, ‘হুমকি দেওয়ার সাহস যখন রয়েছে, তখন আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখিও হতে হবে। একজন সাংবিধানিক পদাধিকারী ব্যক্তিকে হুমকি দিয়েছেন আপনি। তাঁর মাথার দাম ঘোষণা করেছেন। এর পরেও আমাদের কাছে সাহায্য চাইতে এসেছেন। এই ধরনের মানুষের আবেদনের শুনানি করি না আমরা।’
শুধু এখানেই থেমে থাকেন নি আদালত। যোগেশের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একাধিক এফআইআরকে একটি আদালতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ারও আর্জিও খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এব্যাপারে কোনো কিছু শুনতেই নারাজ ছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্ত এবং সঞ্জীব খন্নার ডিভিশন বেঞ্চ।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের এপ্রিলে হনুমান জয়ন্তী উপলক্ষে বীরভূমে অস্ত্র হাতে নিয়ে মিছিল বার করে গেরুয়া বাহিনী। প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে মিছিল করায় পুলিশ বাধা দেয়। অস্ত্র হাতে মিছিল করা যাবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সেই সময়ই মমতার বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেন যোগেশ ভার্সনে। মমতার মাথা কেটে আনতে পারলে ১১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেবেন বলে ঘোষণা করেন। যার পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক এফআইআর দায়ের হয়। সংসদেও বিষয়টি ওঠে।
এইরকম ঘটনা যে আমাদের মত দেশে একেবারেই বাঞ্চনীয় নয় সেটাই ভুলে যায় গেরুয়া শিবির এমনই মনে করছেন অনেকে। আর সুপ্রিম কোর্টের এই রায় সত্যিই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। পরবর্তী সময়ে এইরকম হুমকি দেওয়ার আগে দশবার ভাববে বিজেপি ও সঙ্ঘ এমনই দাবি বহু রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের।