প্রচারের শেষ লগ্নেও ঝড় তুলতে পারল না বাম এবং কংগ্রেস। প্রথম স্থান দখল করে রইল মমতার তৃণমূল। প্রথম দিন থেকেই জলপাইগুড়ি এবং শিলিগুড়িতে ব্যাপক ভাবে প্রচার করেছিল তৃণমূল, শেষদিনেও তাই হল।
জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে ১৮ এপ্রিল নির্বাচন হবে। মঙ্গলবার প্রচারের শেষ দিন ছিল। সোমবার জলপাইগুড়ি শহরে অভিনেত্রী মিমি তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে জনসভায় ঝড় তোলেন। পরে বিকালের দিকে রোড-শো করে শাসক দল শহরে প্রচারের হাওয়া প্রায় পুরোটাই নিজেদের পালে নিয়ে নেয়। দল আগে প্রার্থী ঘোষণা করায় এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মন প্রচারে সবচেয়ে বেশি সময় পেয়েছেন এবং ব্যাপক হারে জনসমর্থনও পেয়েছেন।
প্রচারের শেষ দিনে কংগ্রেসের একটি প্রচার গাড়িতে প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আবেদন রেকর্ড করা মাইক বাজিয়ে শহর ঘুরতে দেখা গিয়েছে। সিপিএমের প্রচারের শেষ দু’দিনে জলপাইগুড়ি শহরে ও শহরতলি এলাকায় কার্যত দেখাই মিলল না। দেখা মেলেনি বিজেপিরও। গত লোকসভা ভোটে ৬৯ হাজার ৬০৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী বিজয়বাবু। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য গতবারের রেকর্ড ভেঙে এবারে অন্তত তিন লক্ষাধিক ভোটে জয়ী হবেন তাঁদের দলের প্রার্থী। গত পুরসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে বামেদের বিপর্যয় হয়েছে। সমৃদ্ধ হয়েছে তৃণমূল।
একই চিত্র দেখা গেল শিলিগুড়িতেও। শেষ লগ্নেও বুথে বুথে জনসংযোগ থেকে প্রচারে বিরোধীদের টেক্কা দিল তৃণমূল কংগ্রেস। শিলিগুড়ি থেকে চোপড়া, ফাঁসিদেওয়া থেকে মাটিগাড়া প্রচারে বিজেপিকে ফেলে কয়েক কদম এগিয়ে থাকল তৃণমূল কংগ্রেস। দলের জেলা সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব আটশোর উপর সভা, মিছিল, রোড শো থেকে প্রতিটি বুথে পৌঁছে রেকর্ড করেছেন। নির্বাচন ঘোষণার দিন থেকে ময়দানে নেমেছিল তৃণমূল। পাহাড় থেকে সমতল পাড়ায় পাড়ায় প্রচার থেকে সভা, মিছিল, পথসভা সবেতেই তৃণমূলের ধারে কাছে আসতে পারেনি কোনও দল।
বিরোধী দলের প্রার্থীরা যেখানে ৪০ শতাংশ বুথে পৌঁছাতে পারেননি, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, এবার তারা ১৬০০ বেশি বুথ এলাকায় পৌঁছে গিয়েছে। দলীয় প্রার্থী অমর সিং রাইয়ের হয়ে প্রচারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দার্জিলিং লোকসভা এলাকায় চারটি জনসভা করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গৌতমবাবু রোজ সকাল ৭টা থেকে প্রচার শুরু করেছেন। রাত ৯টা পর্যন্ত প্রচারে ছিলেন। এক একদিন ১৫টির বেশি জনসভা, পথসভা করেছেন।
গৌতমবাবু বলেন, আমরা নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে প্রচারে নেমেছিলাম। বিরামহীন ভাবে কাজ করেছি। প্রতিটি বুথে আমি গিয়েছি। প্রতিটি মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। এক একদিন ১০ থেকে ১৫টির বেশি সভা করেছি। এমন কোনও সেক্টর নেই যেখানে যাইনি। আমাদের প্রার্থী অমর সিং রাইও গিয়েছেন। আমরা সারা বছর মানুষের সঙ্গে থাকি। কাজেই জনসংযোগ সারাবছরই থাকে। তবে মানুষদের এত সমর্থন পাচ্ছি তাতে পরিষ্কার এবার দার্জিলিং আসনটি আমারাই জিতব।
আগামীকাল ভোট। তাই গতকালই হয়ে গেছে শেষ প্রচার। প্রচারের শেষ দিনেও যেভাবে মানুষ পাশে থেকেছেন তাতে জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা।