গতবার প্রবল মোদী লহরের সুবাদে জিতলেও এবার যোগী রাজ্যের মােরাদাবাদ আসনটি বিজেপির পক্ষে ধরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করছেন খোদ ওই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ কুঁয়র সর্বেশ কুমার। আগামী ২৩ এপ্রিল তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণ হবে মোরাদাবাদ কেন্দ্রে। কিন্তু তার আগেই মুসলিমদের ভােট কংগ্রেসের পক্ষে যাবে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন সর্বেশ কুমার।
উল্লেখ্য, সর্বেশ কুমারের বিরুদ্ধে লড়ছেন কংগ্রেস প্রার্থী ইমরান প্রতাপগড়ি। ইমরান কবি। বিজেপিকে চিরে ফেলছেন তাঁর কবিতায় আর চাঁচাছোলা ভাষণে। আবার এই কেন্দ্রে মহাজোটের প্রার্থী এস টি হাসান চিকিৎসক। মোরাদাবাদে ৪৭ শতাংশ ভোটদাতা মুসলিম। তাদের সবার ভোটই পড়বে জোটের ঝুলিতে। এ নিয়ে আশাবাদী হাসান।
প্রসঙ্গত, ঠাকুরদোয়ারার ৫ বারের বিধায়ক সর্বেশ। আবার এই কেন্দ্রের বরহাপুরের বিধায়কও সর্বেশের ছেলে। সর্বেশের বক্তব্য, সম্প্রদায়ের মোট ৯ শতাংশ ভোটদাতা সাধারণত সপা-বসপাকেই ভোট দেন। জাটবরাও এবার বসপার পক্ষেই থাকবে বলে তাঁর অনুমান। এদিকে, তফসিলি উপজাতি বাল্মিকী সম্প্রদায়কে চটিয়ে ফেলেছেন তিনি।
তাঁদের বক্তব্য, হয় জোটে ভােট দেবেন। নয়তো দেবেন না। বাল্মিকীরা বলছেন, ‘আমরা আগে কংগ্রেসকে ভোট দিতাম। তবে গতবার বিজেপিকে দিয়েছি। আমাদের সমর্থনেই গতবার লােকসভা নির্বাচনে জিতেছেন বিজেপির সর্বেশ কুমার। কিন্তু গত পাঁচ বছরে তিনি একবারও আমাদের খবর নিতে আসেননি। দেখাও করতেন না কারও সঙ্গে। এবার আর তাঁকে ভোট দেব না আমরা।’
উল্লেখ্য, ১৯৫২ থেকে মোরাদাবাদে এগারো বার জিতেছেন মুসলিম প্রার্থীরা। দু’বার আসনটি জিতেছিল তৎকালীন ভারতীয় জনসংঘ। কুয়ঁর সর্বেশ কুমারই বিজেপির প্রথম সাংসদ। তবে তিনি জিতেছিলেন মূলত গতবার সপা এবং বসপা প্রার্থী এস টি হাসান এবং হাজি মহম্মদ ইয়াকুবের মধ্যে ভোট ভাগাভাগির কারণে। এবার আর তা হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই।
২০০৯-এ এই কেন্দ্র থেকে জিতে মোরাদাবাদ কংগ্রেসের ২৫ বছরের জয়ের খরা কাটিয়েছিলেন প্রাক্তন ক্রিকেটার মহম্মদ আজহারউদ্দিন। এবার রাজ বব্বর কে নামতে চেয়েছিল কংগ্রেস। কিন্তু সরে দাঁড়ান তিনি। আসেন ইমরান প্রতাপগড়ি। গোরক্ষার নামে গণপিটুনি থেকে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিব আহমেদের নিরুদ্দেশ নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন প্রতাপগড়ি।
তাঁর জোরাল ভাষণ যে কেন্দ্রের মুসলিমদের টানছে, তা অকপটে মেনে নিচ্ছেন বিজেপি প্রার্থীর অনুগামীরা। তবে সমস্যা অন্য জায়গায়। মোরাদাবাদে সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম আনসারিরা। তারপর আছেন কুরেশিরা। শোনা যাচ্ছে, কুরেশিরা প্রতাপগড়ির দিকেই ঝুঁকে। এর কারণ কুরেশি সম্প্রদায়ের বসপা নেতা হাজি নাসির কুরেশিকে একেবারে শেষ মুহূর্তে ছেঁটে সপার হাসানকে এবার সপা-বসবা মহাজোটের প্রার্থী করা হয়েছে। যা মনেপ্রাণে ঠিক মেনে নিতে পারেননি কুরেশিরা।