বাঙালির বর্ষবরণ মিষ্টি ছাড়া অসম্পূর্ণ । এমনিতেই বাঙালি ভোজনরসিক, তারমধ্যে বছরের প্রথম দিন মিষ্টিমুখ ছাড়া বড় ফ্যাকাসে লাগে। সেই কারণেই দোকানগুলিও উৎসবের উদযাপনে হরেক পসরায় সাজিয়েছে মিষ্টি। তাদের নামেও বাহার, আর স্বাদে অন্যন্য। বলরাম মল্লিক ও রাধারমণ মল্লিকে এবার বৈশাখে শুরু হচ্ছে আম জিলাটো সন্দেশ। দেখতে জিলাটো’র মতো। খেতে সন্দেশ। পাকা আম দিয়ে ছানা মেখে এই মিষ্টি তৈরি হয়। তার বিক্রি শুরু হচ্ছে এই পয়লা বৈশাখ থেকে। এখানকার কর্ণধার সুদীপ মল্লিকের কথায়, “এবার গরমে হিট করবে ফিগ অ্যান্ড হানি সন্দেশ। চিনির ‘চ’ নেই। আগাগোড়া হিমালয়ান হানি বা মধু দিয়ে তৈরি এই সন্দেশে মূল থিম ‘আনজির’। দেখতে ও খেতে অসাধারণ, দাবি সুদীপবাবুর। আর আছে বাদামিকা সন্দেশ। তার পেটে এবং গায়ে যেমন কাজু, পেস্তা আর অ্যামন্ড আছে, তেমনই আছে শসা আর তরমুজের বীজ। অভিনব, আরামদায়ক। দাম ৩০ টাকা”।
রিষড়ার ফেলু মোদকে এই পয়লা বৈশাখে কবিগুরুর আবহ। রবীন্দ্রনাথের ‘শ্যামলী’কে সামনে রেখে সন্দেশ গড়েছে এই প্রতিষ্ঠান। ঘরের আদলে তৈরি সন্দেশে কাজু, পেস্তা আর বাদামের মাখামাখি। গুজরাত থেকে আনানো আমে তৈরি আম দইয়ের পাশাপাশি এবারও থাকছে নতুন বছরের মশলা সন্দেশ। ছোট এলাচ, জাফরান, জায়ফল দিয়ে তৈরি এই দই একেবারে আলাদা স্বাদের, দাবি এখানকার কর্ণধার অমিতাভ দে’র। বৈশাখে বাড়িতে রেখে খাওয়ার জন্য এখানে হরেক রকমের কড়া পাকের সন্দেশ পাওয়া যায়। নববর্ষের প্রাক্কালে চৈত্র সংক্রান্তিতে বালিগঞ্জ ফাঁড়িতে নতুন শোরুম খুলেছে হিন্দুস্থান সুইটস। তাদের এগারোতম শোরুম। সংস্থার কর্ণধার রবীন্দ্রনাথ পাল জানালেন, তাঁদের স্পেশাল সন্দেশ অমৃতকুম্ভ। সন্দেশের গায়ে আগাগোড়া মালাই। ২৫ টাকা দাম। আছে ‘নববর্ষ ১৪২৬’ লেখা স্পেশাল সন্দেশ। সঙ্গে মিলবে অমৃতপয়োধি। দই। কিন্তু অন্য ঢঙে। এই দইয়ের এক চতুর্থাংশ ক্ষীর। দইয়ের মাথাটা পুরু, ঘন।
হাওড়ার ব্যাতাই মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে নববর্ষে থাকছে লিচুর ঝিলিক। লিচু বেটে, তা ছানার সঙ্গে মিশিয়ে সন্দেশ করা হয়। তাকে ফেলা হয় দুধে। সেই মিষ্টিকে লিচু দিয়ে সাজিয়ে আনা হয় ক্রেতার সামনে। দাম ২০ টাকা। এখন পাকা আম খুঁজতে কষ্ট করতে হচ্ছে। কিন্তু তবু ম্যাঙ্গো মালাই তৈরি করতে কোনও ছদ্ম-আমের গন্ধ ও স্বাদ ব্যবহার করতে চান না এখানকার কর্ণধার সৈকত পাল। তিনি বলেন, দাম বেশি পড়ছে ঠিকই। কিন্তু তার জন্য কোয়ালিটি খাটো করতে রাজি নই”।