এবারের লোকসভা ভোটে স্বয়ং চৌকিদারও যদি পাটনা সাহিব থেকে প্রার্থী হন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে লড়তেও তিনি বিন্দুমাত্র ইতস্তত বোধ করবেন না। বরং খুশিই হবেন। শনিবার সাফ এ কথা জানিয়ে দিলেন দিলেন বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ এবং বর্তমান কংগ্রেস নেতা শত্রুঘ্ন সিনহা।
শত্রুঘ্ন বিজেপির সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দুটোই ছিলেন। কিন্তু দলের বর্তমান নেতৃত্বের উপর আস্থা হারিয়েই সম্প্রতি দল ছেড়েছেন তিনি। আর কংগ্রেসে যোগ দিয়ে তাঁর প্রিয় কেন্দ্র বিহারের পাটনা সাহিব থেকে ভোটে লড়ার টিকিট পেয়ে গেছেন। তাঁর বিপক্ষে আছেন বিজেপির হেভিওয়েট মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। তবু জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শত্রুঘ্ন। শনিবার খানিকটা বলিউডি কায়দাতেই বিহারীবাবু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে লড়তে পারলে তিনি খুশি হতাম।’
প্রসঙ্গত, পাটনা সাহিবে শত্রুঘ্ন দাঁড়ানোর পর থেকেই একটা গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে, কোনও ভাবেই নাকি ওই কেন্দ্র থেকে জিততে পারবেন না তিনি। কারণ ওই কেন্দ্রটি বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। চার দিকে যখন এই গুঞ্জন চলছে, তখনই আসরে নামেন বিহারীবাবু। শনিবার ওই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন, এবার মানুষ বিজেপিকে উচিত শিক্ষা দেবে। তিনি বলেন, ‘বেশ কিছু জায়গা থেকে খবর আসছে, বারাণসী ছাড়াও পাটনা সাহিব থেকে লড়তে পারেন নরেন্দ্র মোদী। মোদী যদি এই কেন্দ্রে লড়েন তাতে কী হয়েছে! লড়ুক না। ওঁর বিরুদ্ধে আমিও লড়তে চাই।’
ওই দিন তাঁর আক্রমণের নিশানায় ছিলেন বিহারের বিজেপি নেতা সুশীল মোদীও। তিনি বলেছিলেন, শত্রুঘ্ন নির্বাচনে হারবেন। এ প্রসঙ্গে শত্রুঘ্ন পাল্টা আক্রমণ করে বলেন, ‘সুশীল মোদী নিজে কেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন না? তা না করে অন্য এক জনকে সামনে ঠেলে দিয়েছেন! যে ব্যক্তি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের ভোটও জিততে পারেননি।’ পাটনা সাহিব কেন্দ্র থেকে এ বার শত্রুঘ্নর পরিবর্তে রবিশঙ্কর প্রসাদকে টিকিট দিয়েছে বিজেপি। শত্রুঘ্ন তাঁর মন্তব্যে যে ‘অন্য ব্যক্তি’র কথা উল্লেখ করেছেন, তিনি এই রবিশঙ্কর প্রসাদই।
২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকেই বিজেপির টিকিটে জিতেছিলেন শত্রুঘ্ন। কিন্তু সময় যত গড়িয়েছে তাঁর সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়েছে। দলের বিরুদ্ধে বার বার সরব হয়েছেন। নানা বিষয় নিয়ে আক্রমণ করেছেন নরেন্দ্র মোদীকে। তাঁর এই ভূমিকা নিয়ে দলের অন্দরেই ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। শত্রুঘ্নকে এ ব্যাপারে বার বার সতর্কও করেছিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। বরং আক্রমণের ধার আরও ঝাঁঝালো করেছিলেন। শুধু তাই নয়, তিনি যে বাংলার বাঘিনী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই দেশের আগামী প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান, তাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন শত্রুঘ্ন।