লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই ‘অতিসক্রিয়’ হয়ে উঠেছিল আয়কর দফতর, ইডি, সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। তবে ভোট শুরু হতেই সরাসরি হুমকির পথে হাঁটছেন বিজেপি নেতৃত্ব। শনিবার দুপুরে ধনেখালি বিধানসভার গুড়াপে কর্মীসভা করতে গিয়ে সরাসরি তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী অসীমা পাত্রকে হুমকি দিয়ে বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘তুলে নিয়ে চলে যাব।’ তবে তাতে বিন্দুমাত্রও বিচলিত না হয়ে, পাল্টা দিলেন অসীমা। লকেটের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাব শিষ্যার বার্তা, ‘ওয়েলকাম। কবে আসবে বলুক।’
প্রসঙ্গত, তাঁর গরম গরম বক্তৃতার জন্য এতদিনে হুগলী থেকে টিকিট পেয়েছেন লকেট। আর তাতেই আরও উজ্জীবিত হয়ে একধাপ এগিয়ে সরাসরি হুমকির রাজনীতিতে মেতেছেন তিনি। প্রচারে বেরিয়ে গতকাল লকেট জানান, এ বার ‘কাঁটে কে টক্কর’। সেইসঙ্গে রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী এই হুমকি দেন যে, আমি বলে যাচ্ছি, এমএলএ-কে আমি নিজে গিয়ে তুলে আনব। তবে তাঁর গড়ে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে হুঙ্কার ছাড়বেন লকেট, আর চুপ করে বসে থাকবেন অসীমা, তাই আবার হয় নাকি! তাই এরপরেই ধনেখালির বিধায়ক চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, ‘আমি ওঁকে ওয়েলকাম জানাচ্ছি। কবে আসবে বলুক। আমি তৈরি আছি। ধনেখালির মানুষ তৈরি আছে।’ লকেটের বক্তব্য নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন অসীমা।
উল্লেখ্য, বাম আমলে ধনেখালি ছিল সিপিএমের একচ্ছত্র আধিপত্য। লাল ঝাণ্ডা ছাড়া অন্য রাজনৈতিক দলের পতাকা ছিল ‘নিষিদ্ধ’। শুধু তো বিরোধী দলকে শায়েস্তা করা নয়, সিপিএমের ভিতরকার কোন্দলও ছিল চরমে। অনিল বসু বনাম রূপচাঁদ পালের গোষ্ঠী লড়াইয়ে দলের জোনাল সম্পাদক প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় খুন হয়ে গেছিলেন। সন্ধে বেলা বাইক নিয়ে যাওয়ার সময় গলায় গরুর দড়ি টেনে খুন করা হয়েছিল প্রদীপবাবুকে। তবে দীর্ঘদিন লড়াই করেই এই জেলায় বাম দূর্গের পতন ঘটায় তৃণমূল। তাদের অভিযোগ, কদর্য রাজনীতি করছে বিজেপি। বাংলায় তাদের অস্তিত্ব যে সঙ্কটে সেটা বুঝেই এমন রাজনীতিতে নেমেছে গেরুয়া শিবির। লোকসভায় হুগলী কেন্দ্র থেকে লকেটের বিপরীতে লড়ছেন দুবারের সাংসদ রত্না দে নাগ। তাই এখানে তৃণমূলের পাল্লা ভারী বুঝেই কিছুটা ভীত হয়ে হুমকির পথে হাঁটছেন লকেট। মত রাজনৈতিক মহলের।