ভারত নিজের দেশ। কিন্তু সীমান্তের ওপারে থাকা মানুষগুলো না এদিকে যেতে পারেন না ওদিকে। ভারতের ভোটাধিকার হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধা অনেক বেশি। তাই হাজারও সমস্যা লেগেই থাকে তাঁদের। কাকে বলবেন,কে-ই বা শুনবে তাঁদের কথা? তাই তাঁদের জীবন কাটছে দু’পারের ভালমন্দ মিশিয়েই। আন্তর্জাতিক সীমারেখার নানা অজুহাত দেখিয়ে বামেদের সময়ে এই গ্রামে বিদ্যুৎসংযোগ পৌঁছনোর ব্যবস্থা করেনি কেউ। কিন্তু, তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় ফিরতেই, কাঁটাতারের ওপারে থাকা গ্রামটি প্রতিশ্রুতির আলোয় ভরে উঠেছে বলেই জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার ২৫২ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমারেখায় মধ্যে হিলি ব্লকের হাঁড়িপুকুর, তেলিয়াপাড়া, উজাল, গোবিন্দপুর-সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম কাঁটাতারের ওপারে। ভারত নিজের দেশ হলেও, ভারতের মূল ভূখন্ডে থেকেও তাঁরা তেমন সুযোগ-সুবিধা পান না। কারণ, ভারতে যাতায়াত কিংবা যোগাযোগ যতটা কঠিন, বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ততটাই সহজ। কেননা, কাঁটাতারের ওপারে থাকা ভারতীয় ভূখন্ড এবং বাংলাদেশি গ্রামগুলোর মাঝে নেই কোনও বেড়া বা বাঁধন। স্বাভাবিকভাবেই দুই দেশের গ্রামগুলির মধ্যে যোগাযোগ উন্মুক্ত। হিলিতে এইরকম একটি গ্রাম হাঁড়িপুকুর।
এই গ্রামে ভোটার সংখ্যা ২৮০-র কাছাকাছি। সকলেই তৃণমূল মনোভাবাপন্ন। কেননা, ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসতেই সুফল মিলতে শুরু করেছে তাদের প্রত্যন্ত গ্রামেও। রাস্তাঘাট তো বটেই বিদ্যুতের সংযোগও মিলেছে এই সরকারের আমলেই। একটা সময় গ্রামের কেউ কেউ বাধ্য হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ থেকেই। তখন নিজেদের ভারতীয় বলতে বাধত। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়নশীল কাজের প্রভাব আটকাতে পারেনি কোনও কাঁটাতারকেই। স্বভাবতই, গ্রামে ভোটের হাওয়া তৃণমূলের দিকেই।
হাঁড়িপুকুরে থাকা আড়াইশো পরিবারের দাবিতে এতদিন ছাই চাপা পড়েছিল। ভোটের সময় প্রতিশ্রুতি দিলেও, পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক সীমারেখার নানা অজুহাত দেখিয়ে কেটে পড়ত সবাই। তবে স্থানীয়দের দাবি, তৃণমূল সরকার শাসনে আসায় একটু হলেও পালটেছে চেহারা। ভোটের আগে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজ করতে দেখা গিয়েছে একমাত্র তৃণমূল সরকারকেই।