বিগত ৮ বছরে একাধিক ক্ষেত্রেই সফল হয়েছে বাংলা। একদিকে কন্যাশ্রী, উৎকর্ষ বাংলা, সবুজসাথীর মতো প্রকল্পগুলি যেমন পেয়েছে আন্তর্জাতিক সাফল্য, তেমনি কেন্দ্রীয় রিপোর্টে ১০০ দিনের কাজে পরপর তিনবার বাংলার মুকুটে উঠেছে সেরার শিরোপা। পঞ্চায়েত-গ্রামোন্নয়ন এবং রেশন ব্যবস্থাতেও সারা দেশের কাছে এ রাজ্য হয়ে উঠেছে রোল মডেল। এইসব কারণেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবারই এই দাবি করে থাকেন যে ‘এগিয়ে বাংলা’। আর এবার আবারও মান্যতা পেল মমতার এই দাবি। সম্প্রতি এক রিপোর্টে উঠে এসেছে যে, গোটা দেশে গড় বেকারত্বের হার যখন ৬.১ শতাংশ, তখন বাংলায় বেকারত্বের হার তার তুলনায় অনেকটাই কম। মাত্র ৪.৬ শতাংশ।
শুধু তাই নয়, ওই রিপোর্টে দেখা গেছে হরিয়ানা, আসাম, বিহারের মতো রাজ্যগুলিতে বেকারত্বের হার অনেকটাই বেশি। যার অর্থ, গোটা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এ রাজ্যেই। কর্মসংস্থান তৈরি ও বেকারত্ব দূরীকরণে এগিয়ে মমতার বাংলাই। ওই রিপোর্টে দেখা গেছে, বেকারত্বের হার সবচেয়ে বেশি বিজেপি শাসিত রাজ্য হরিয়ানায়। সেখানে বেকারত্বের হার ৮.৬ শতাংশ। এরপরেই রয়েছে আসাম (৮.১ শতাংশ)। সেখানেও বিজেপির জোট সরকার। এরপরেই একে একে রয়েছে উত্তরাখন্ড (৭.৬ শতাংশ), বিহার (৭.৬ শতাংশ), উত্তরপ্রদেশ (৬.৪ শতাংশ) এবং কর্ণাটক (৪.৮ শতাংশ)। উল্লেখ্য, কর্ণাটক ছাড়া বাকি সবকটি রাজ্যেই সরকারে বা সরকারের জোটসঙ্গী হিসেবে রয়েছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, তৃণমূল জমানায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উন্নয়নের জোয়ার এসেছে রাজ্যের সর্বক্ষেত্রেই। শিল্পে অঢেল বিনিয়োগের পাশাপাশি, দ্রুত গতিতে বেড়েছে কর্মসংস্থানও। ১০০ দিনের কাজ, ক্ষুদ্র-কুটির শিল্প-সহ নানা ক্ষেত্রেই কাজের সুযোগ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। এছাড়া বেকার যুবকদের চাকরির জন্য মমতা এনেছেন যুবশ্রী প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত রাজ্যের ১ লক্ষ কর্মপ্রার্থী যুবককে মাসে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি, রাজ্যের যুব প্রজন্মের জন্য ‘যুবশ্রী অর্পণ’ নামেও একটি নতুন প্রকল্পেরও ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আবার ৫০,০০০ ছেলেমেয়েকে ব্যবসার জন্য ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষেই বিধানসভার প্রশ্নোত্তর পর্বে মুখমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘রাজ্যে বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমে গেছে।’ একইসঙ্গে আগামী ২ বছরের মধ্যে ১২ লাখ কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি মতো বাংলায় বেকারদের স্বনির্ভর করতে ৩৭,৫০০ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণাও করেন মমতা। যার সাহায্যে ই-রিকশা কিনতে পারবেন তারা। জানা গেছে, মোট ১০ হাজার ই-রিকশা বিলির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। শুধু তাই নয়, ছেলেমেয়েদের দক্ষতা বাড়াতে উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্পও চালু হয়েছে। সেখানে তিন মাসেই রাজ্যের ১ লক্ষ ৫৭ হাজার প্রার্থী নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। ৪০০-রও বেশি সংস্থা সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিতে সম্মত হয়েছে। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় রিপোর্টে এই তথ্যও উঠে এসেছে যে, গোটা দেশে যখন ২ কোটি চাকরি নষ্ট হয়েছে, এ রাজ্যে ১ কোটি চাকরি তৈরি হয়েছে। তাই বেকারত্ব হঠিয়ে কর্মসংস্থান তৈরিতে দেশের মধ্যে ‘এগিয়ে বাংলা’ই।