দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেছে সাড়ে ৩ বছর। কিন্তু এখনও মানুষের মন থেকে মুছে যায়নি ৪৩ মাস আগে গৌতমবুদ্ধনগরের দাদরি বিধানসভার অন্তর্গত বিশাড়া গ্রামের মর্মান্তিক ঘটনার কথা। ঘরের ফ্রিজে গোমাংস রাখার ‘অভিযোগে’ বছর পঞ্চান্নর আখলাককে লাঠিপেটা করে, ইট দিয়ে থেঁতলে খুন করেছিল হিদুত্ববাদীরা। সেই কালো দিনের স্মৃতি উস্কে দিল সদ্য আসামে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা। আসামের বিশ্বনাথ জেলায় গোমাংস বিক্রি করছিলেন এক ব্যক্তি। এটাই ছিল তাঁর ‘অপরাধ’। তিনি বাংলাদেশি কি না, তাঁর এনআরসি-তে নাম আছে কি না, এমনই সব প্রশ্ন তুলে তাঁকে নিগ্রহ করে এলাকার কিছু ব্যক্তি। অভিযোগ, তাঁরা সকলেই বিজেপি সমর্থক। শুধু তাই নয়। তাঁকে নিগ্রহ করার সময় ভিডিও করেও তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেওয়া হয়। যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল।
[Total_Soft_Poll id=”2″]
ওই ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি দেখে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মধুপুর এলাকার বাজারে দোকান চালান সওকত আলি। সম্প্রতি স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে গোমাংস বিক্রি করা নিয়ে তাঁর অশান্তি হয়। ১০-১২ জন যুবক তাঁর দোকানে চড়াও হয়। তাঁকে রাস্তায় পা মুড়ে বসিয়ে মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়। এরপর তাঁকে জোর করে শুয়োরের মাংসও খাওয়ানো হয়। জানা গেছে, এলাকায় ওই যুবকরা বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। আপাতত হিন্দুত্ববাদীদের দেওয়া ‘শাস্তি’র চোটে গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সওকত।
সওকতের ভাই সাহাবুদ্দিনের অভিযোগ, সওকতকে বাংলাদেশি বলে দাবি করে হিন্দুত্ববাদীরা তাঁকে বেধড়ক মারে। তাঁর জাত নষ্ট করতে তাঁকে জোর জবরদস্তি শুয়োরের মাংস খাওয়ানো হয়। শুধু সওকতকেই নয়, বাজারে গোমাংস বিক্রির অনুমতি দেওয়ায় মহলদার কমল থাপাকেও মারধর করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পাঁচ জনকে আটক করা হয়। এসপি রাকেশ রৌশন যদিও দাবি করছেনে, ‘বিষয়টি সাম্প্রদায়িক নয়।’ তবে এ ঘটনা থেকেই স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলছে, দেশে হিন্দুত্ববাদীদের রোয়াব যে হারে বাড়ছে তাতে আবারও একটা আখলাক বা আবারও একটা বুলন্দশহরের মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। এবং তার জন্য দায়ি হবে বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণ ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতিই।
[Total_Soft_Poll id=”3″]