বেশিদিনের কথা নয়। মাত্র চোদ্দো মাস আগেই ত্রিপুরার বাম দুর্গের পতন ঘটিয়ে রাজ্যের মসনদে বসেছিলেন বিপ্লব দেব। কিন্তু এক বছর দু’মাস পরেই অদ্ভুত ভাবে বদলে গিয়েছে ত্রিপুরায় গেরুয়া শিবিরের অবস্থা। গোটা রাজ্যজুড়েই বইতে শুরু করেছে বিজেপি বিরোধী হাওয়া। এরই মধ্যে সেখানে বিজেপি জোট সরকারের শরিক ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়াকে (আইপিএফটি) নিয়ে জটিলতা বেড়েই চলেছে। রাজ্যে একসঙ্গে ক্ষমতায় থেকেও ত্রিপুরা পূর্ব ও পশ্চিম, দু’টি কেন্দ্রেই বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়েছে আইপিএফটি। সরকারে রাজস্ব ও মৎস্যমন্ত্রী তথা দলের সভাপতি নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা পূর্ব কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন।
পশ্চিম কেন্দ্রে প্রথমে যাঁকে প্রার্থী করা হয়েছিল, তাঁর মনোনয়নপত্র ‘টেকনিক্যাল’ কারণে বাতিল হয়ে যাওয়ায় ডামি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দাখিল করা দলীয় বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মা এখন প্রার্থী। আগরতলার রাজনৈতিক মহলে কয়েকদিন ধরেই খবর ছিল, দলের রাজ্য সহ-সভাপতি অনন্ত দেববর্মা কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন। সোমবার সেটাই হয়েছে। কয়েকদিন আগেই তিনি আইপিএফটি ছাড়ার ঘোষণা করেছিলেন। গত কয়েকদিন ধরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদ্যোৎ দেববর্মনের সঙ্গে তাঁর আলাপ-আলোচনা চলছিল। সোমবারই তিনি উজ্জয়ন্ত রাজবাড়িতে গিয়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন।
গত বছরের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে আটটি আসন জিতেছিল আইপিএফটি। ৯ সদস্যের ত্রিপুরা মন্ত্রিসভায় নরেন্দ্র ছাড়াও দলের আরও একজন মন্ত্রী আছেন। আলাদাভাবে ভোটে লড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ। জনসভায় বিজেপি নেতারা দুর্নীতি-সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলছেন আইপিএফটির বিরুদ্ধে। তবে নরেন্দ্র জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের শরিক থেকেও লোকসভা ভোটে আলাদা লড়াই করা যেতেই পারে। মেঘালয়েই সেটা হয়েছে। বিজেপি অবশ্য ব্যাপারটাকে ভাল চোখে দেখছে না। অস্বস্তিতে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব ভোটের পর কয়েকজন মন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি পর্যন্ত দিয়েছেন।