উন্নয়নের ক্ষেত্রে মোদীকে সবসময়ে বলে বলে গোল দেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা সাধারণ মানুষের জন্যে যেভাবে কাজ করেন তার ধারে কাছেও নেই মোদী। এবার প্রার্থী তালিকার দিক দিয়েও মমতার কাছে হেরে গেলেন মোদী। শুধু বিজেপি নয়, এই ক্ষেত্রে সবাইকে অবলীলায় হারালেন মমতা। বাংলা থেকে লোকসভায় মহিলা প্রতিনিধি পাঠানোর প্রাথমিক দৌড়ে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে হেলায় হারালেন রাজ্যের প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ৪২ কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকায় চোখ বোলালে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস ১৭ জন মহিলাকে টিকিট দিয়েছে। যা ৪০ শতাংশের বেশি। সেখানে বিজেপির মহিলা প্রার্থীর হার মাত্র ১১ শতাংশ। ৪২টি কেন্দ্রে মাত্র পাঁচজন মহিলা পদ্ম প্রতীক পেয়েছেন। অন্যদিকে, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস এখনও পর্যন্ত ৪০টি করে আসনে প্রার্থী দিয়েছে। সেখানে দু’টি দলই মহিলা প্রতিনিধিত্বে শতাংশের বিচারে তৃণমূলের তুলনায় অর্ধেক টিকিট দিতে সমর্থ হয়েছে। বাম এবং কংগ্রেসের তরফে আটজন করে মহিলা প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। যা রাজ্যের মোট আসনের মাত্র ২০ শতাংশ। কোনও দলই নেই মমতার আশেপাশে।
শুধু যে কম সংখ্যক মহিলা প্রার্থী তাই নয়, উপরি পাওনা হিসাবে আছে প্রার্থী নিয়ে দলীয় কোন্দল। রাজ্য বিজেপি সূত্রের দাবি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের টিকিট বিলি প্রক্রিয়া ঘিরে দলের অন্দরে চরম ক্ষোভ রয়েছে। যে পাঁচজন পদ্ম চিহ্নে এবারে ভোটে লড়ছেন, তাঁদের মধ্যে একজন ছাড়া বাকি চারজনকে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এঁরা হলেন ভারতী ঘোষ, মাফুজা খাতুন, শ্রীরূপা মিত্র এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবার এই চারজন প্রার্থীর কেউই দীর্ঘদিন বিজেপি করছেন না, প্রত্যেকেই অন্য দল থেকে এসেছেন ফলে পুরনো কর্মীদের ক্ষোভ জন্ম নিয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই। দীর্ঘদিন বিজেপির হয়ে কাজ করা মহিলা প্রার্থীর কি সত্যিই অভাব ছিল, প্রশ্ন উঠছে ৬ মুরলীধর সেন লেনের অফিসে।
মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য, গেরুয়া পার্টি মুখে নারীদের নিয়ে ভাষণ দেয়। কাজে কী করে, তা ওদের প্রার্থী তালিকা থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদের উভয়কক্ষে ৩৩ শতাংশ মহিলা প্রতিনিধিত্বের পক্ষে প্রথম থেকেই সওয়াল করে আসছেন। তৃণমূলের টিকিট বণ্টনে আমরা ৪০ শতাংশেরও বেশি মহিলা প্রার্থী দিয়েছি।
অন্যদিকে মমতার অন্দরমহলে প্রার্থী নিয়ে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। মমতার একান্ত অনুগত সৈনিক তাঁরা। প্রত্যেকেই খুশি হয়েছেন এই প্রার্থী তালিকা নিয়ে। এত জন মহিলা এবারে প্রার্থী হওয়াতে প্রশংসিতও হয়েছেন মমতা। প্রত্যেকেই ঝড় তুলছেন প্রচারে। আর অন্যদিকে গেরুয়া তথা বাকি শিবির গুলির হাল বেহাল। কেউ প্রার্থী নিয়ে বিক্ষোভে ভুগছে কেউ বা সাড়া পাচ্ছেন না প্রচারে। আবারও প্রমাণিত হল মমতার বিকল্প কেউ নেই। মমতার মত কেউ নেই।