দলের ইস্তেহারে যখন দেশের জুড়ে এনআরসির চালু করার কথা বলছে বিজেপি, তখন এই ইস্যুতেই কেন্দ্রীয় সরকারকে চ্যালেঞ্জ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার কোচবিহারের রাসমেলা মাঠ থেকে মমতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, ‘এনআরসি পুরোটাই ভাঁওতা। অসমে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ দিয়েছে। বাংলার এনআরসি করতে দেব না। ক্ষমতা থাকলে করে দেখাক।’ সঙ্গে জানিয়ে দেন, ‘গান্ধীর হত্যাকারীদের কাছ থেকে দেশ প্রেম শিখব না।’
সাধারণ মানুষকে সভায় আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল বলে গতকাল অভিযোগ তুলেছিলেন মোদী। জবাবে এ দিন তাঁকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে উল্লেখ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।তাঁর কথায়, রাজ্য সরকারই মোদীকে সভা করার জায়গা করে দিয়েছিল। তা সত্ত্বেও মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন নরেন্দ্র মোদী। ‘অকৃতজ্ঞে’র মতো কথা বলছেন। গত পাঁচ বছরে মোদী সরকার কিছু করেনি। তাই তাঁর কাছ থেকে জবাব চাওয়া সাজে না বলেও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন তিনি। পাশাপাশি মোদী যে ইস্যুগুলি তুলে আক্রমণ করেছিলেন, প্রত্যেকটির পাল্টা জবাব দেন মমতা।
সভার শুরুতেই তৃণমূল জমানায় উত্তরবঙ্গ কী কী কাজ হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দিল্লীর বাবুরা নন, কোচবিহারকে হেরিটেজ শহর করেছে এ রাজ্যে তৃণমূল সরকারই। কোচবিহারে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজে তৈরি করে দিয়েছে সরকার।’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘এই নির্বাচন দিল্লীর সরকার পরিবর্তনের নির্বাচন। অথচ ফ্যাসিবাদী ঔদ্ধত্যপূর্ণ প্রধানমন্ত্রী তাঁর কাছে কৈফিয়ত তলব করছেন!’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘সারদা-নারদা কেলেঙ্কারি হয়েছে সিপিএম জমানায়। ছয় বছর ধরে তদন্ত চালিয়েও অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার। উলটে অভিযুক্তদের পাশে বসিয়ে মিটিং করছেন প্রধানমন্ত্রী।’ রীতিমতো স্লোগান দেওয়ার ঢঙে বলেন, ‘সারদা-নারদা-হাওয়ালা মোদীর বাঁশিওয়ালা।’
লোকসভা ভোটে মুখে কলকাতা পুলিশ কমিশন-সহ রাজ্যের পুলিশকর্তাদের রদবদল নিয়ে কমিশনের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চরমে। সোমবার জনসভায় নিজের ভাষণে সেই প্রসঙ্গও তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, ‘দু’একজন অফিসারকে বদল করে কোনও লাভ হবে না। মনে রাখবেন, যাঁরা রয়েছেন, তাঁরাও আমাদের অফিসার। আর যাঁরা আসবেন, তাঁরা জানেন কীভাবে কাজ করতে হয়।’
