ভোটের আগে বিতর্কে যেন পিছুই ছাড়ছে না বিজেপির। একেই গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে আতান্তরে বাংলার গেরুয়া শিবির। তার ওপর মোদী-শাহদের চিন্তা বাড়াল কেন্দ্রীয় নীতির গেরোয় দিশেহারা রাজ্যের স্বর্ণশিল্পীরা। ভোটের মুখে এবার সরাসরি বিজেপি বিরোধীতার পথ নিল স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত রাজ্যের ১২ লক্ষ মানুষ। বিজেপিকে উৎখাত করার লক্ষ্যে বদ্ধপরিকর অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘ। শনিবার সংগঠনের এই সিদ্ধান্তের কথা পরিষ্কার জানিয়েছেন সঙ্ঘের কার্যকরী সভাপতি মদনমোহন পাল।
তিনি বলেন, ‘নোটবন্দী, স্বর্ণ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কবৃদ্ধি, জিএসটি, হলমার্ক বাধ্যতামূলক করা, কেন্দ্রের এ সব ভ্রান্ত নীতির জেরে সমস্যায় পড়েছেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাই কেন্দ্রে ফের বিজেপি সরকারের কথা আমরা কেউই ভাবতে পারছি না।’ কেন্দ্রের মুদ্রা যোজনাকে কটাক্ষ করে মদনবাবুর বক্তব্য, ‘গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ছোট ব্যবসায়ীদের ঋণ দেওয়ার জন্য এই যোজনা। কিন্তু পরে দেখা যায়, সেই ঋণ সকলের জন্য হলেও ব্রাত্য শুধুমাত্র স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা।’
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের নোটবন্দীর সিদ্ধান্তের জেরে বহু সোনার দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। কর্মহীন হয়েছেন স্বর্ণশিল্পের সঙ্গে যুক্ত দেশের প্রায় ৮ লক্ষ মানুষ। তারপরও সেই ঘা শুকাতে দেয়নি মোদী সরকার। কোপ পড়েছে জিএসটির। একেই স্বর্ণ আমদানীর শুল্ক বাড়িয়ে ১২ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। তার ওপর আবার ৩ শতাংশ জিএসটি। ফলে ভারতের মাটিতে সোনা এসে পৌঁছতেই তার দাম ১৫ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। জিএসটি লাগু হওয়ার কিছুদিনের মাথায় আবার হলমার্ক বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। আর এরপরই ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড অনুমোদিত সেন্টারগুলি জানিয়ে দেয়, জিএসটি না থাকলে হলমার্ক দেওয়া হবে না। ফের ২৫ হাজার টাকা খরচ করে জিএসটি রেজিস্ট্রেশন করতে হয়েছে ব্যবসায়ীদের। তাই কেন্দ্রের একের পর এক ভ্রান্ত নীতির খেসারত গুনে চলা স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা এবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আর বিজেপি নয়। এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধেই ভোট দেবেন তাঁরা প্রত্যেকে। এই ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তি বাড়াচ্ছে দিলীপ ঘোষদের।