প্রধানমন্ত্রী হরিদাস, ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী। কোচবিহারের রাসমেলার মাঠ থেকে এই ভাষাতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাই পরবর্তী কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। স্পষ্ট বলেন, ‘আগামীদিনে দিল্লী গড়বে তৃণমূল। আর বাংলায় এবার শূন্য পাবে বিজেপি’।
মমতা অভিযোগ করে বলেন, ‘চা ওয়ালা এখন ভাঁওতাবাজ হয়েছে। বছরে দু কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পূরণ করেননি। ভোট কেন একটা কাঁচা কলাও দেবে না মানুষ। রাজনৈতিকভাবে তোমাকে বিদায় দেবে’। মমতার কথায়, ‘৫ বছরেও চৌকিদারের দেখা পাওয়া যায়নি। বিনাশকালে বুদ্ধি নাশ হয়েছে মোদীর’।
এদিনের সভায় প্রধানমন্ত্রীকে হরিদাস বলে সম্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে ফ্যাসিবাদী এবং স্বৈরাচারীও বলেন তিনি। এনআরসি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, ‘বাংলায় এনআরসি করতে দেব না’। কোচবিহারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরে বলেন, ‘কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ থেকে শুরু করে আইটিআই সবই হয়েছে তৃণমূলের সময়ে। ৬৬ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান করেছে তৃণমূল। রাজ্য সরকার ১১০০ কোটি টাকা খরচ করেছে’।
চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারি নিয়েও এদিন ফের মুখ খোলেন মমতা। বামেদের আমলে গোটা কেলেঙ্কারি ঘটেছে জানিয়ে মমতা বলেন, ‘সারদা তদন্ত ফেলে রাখা হয়েছে’। মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, ‘গত পাঁচ বছর সারদা নিয়ে তদন্ত ফেলে রাখা হয়েছে কেন?’ মমতার কথায়, ‘সারদা-নারদা- হাওয়ালা মোদীবাবুর বাঁশিওয়ালা। রাফালেতে কত পেয়েছেন সারদা-নারদা-হাওয়ালার বড় নেতারা? ২০১৩ সালে সারদা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। ছয় বছরে বিজেপি কতটাকা ফেরত দিতে পেরেছে’।
মোদীর সভা মঞ্চ নিয়েও বিজেপিকে চরম ভর্ত্সনা করেন মমতা। বলেন, ‘গত ৩১ তারিখ আমরা প্রথম এই মাঠ বুক করি। রবীন্দ্রনাথ ঘোষরা এই মাঠ বিজেপিকে দিতে চাইছিল না। আমি বললাম দিয়ে দে। কোথায় কৃতজ্ঞতা জানাবে, তা না উল্টে আজেবাজে বলছে।’ মমতার হুঁশিয়ারি, ‘আমি ভাঙি কিন্তু মচকাই না। আমরা লড়ি কিন্তু মাথানত করি না। আমরা লড়াই করে বেঁচে ছিলাম, বেঁচে থাকব। আর বেঁচে যদি থাকি মোদীবাবু ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে কড়ায় গন্ডায় হিসেব নিয়ে ছাড়ব। মনে রেখো যত চুরি করেছো, যত ডাকাতি করেছো, যত খুন করেছো, তার ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বিচার হবে।’
