বিপদ আর বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছুই ছাড়ছে না বিজেপির। দেশের প্রতিটি প্রান্তেই ক্রমশ জমি হারাচ্ছে গেরুয়া শিবির। এবার লোকসভা ভোটের মুখে ফের অস্বস্তি বাড়ল তাদের। অবশেষে বাবুল সুপ্রিয়র গাওয়া থিম সং সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিল নির্বাচন কমিশন। বন্ধ হল গানের প্রচার। প্রসঙ্গত, এর আগে কমিশনের তরফে পদ্ম শিবিরকে তাদের ভোটের ‘থিম সং’ পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিজেপি জানিয়েছিল, কোনও ভাবেই গানটির একটি শব্দও পরিবর্তন করা হবে না। যার জেরে এমন কড়া পদক্ষেপ করল কমিশন।
প্রসঙ্গত, বাবুলের গাওয়া থিম সংটি সামনে আসতেই তৃণমূলের অভিযোগ ওঠে গানের ছত্রে ছত্রে সমালোচিত হয়েছে রাজ্য সরকার। ওই গানে কটূক্তি করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। শুধু তাই নয়। পরে জানা যায়, নির্বাচনী প্রচারের জন্য গানটি তৈরি হলেও গান প্রকাশের আগে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি নেওয়া হয় নি। কমিশন বাবুলকে শোকজ করার ব্যাখ্যায় বলেছিল যে মিডিয়া সার্টিফিকেশন ছাড়াই গানটি ইউটিউবে দেওয়া হয়েছে।
এর উত্তরে বাবুল দাবি করেন, গানটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। গানটিকে হোয়াটসঅ্যাপে কয়েকজন দলীয় কর্মীকে পাঠিয়ে শুধুমাত্র পরামর্শ চেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকেই ছড়িয়ে পড়ে গানটি। মিডিয়াই গানটি প্রচার করেছে। কিন্তু বাবুলের সেই উত্তর খুশি করতে পারেনি কমিশনকে। বাবুলের যুক্তি খারিজ হয়ে যায় তারই একটি টুইটে। সেখানে একটি ভিডিওতে দেখা যায় বাবুল রেকর্ডিং করছেন। আর তাতে লিখেছেন, ‘খুব আনন্দ হচ্ছে। আপনাদের সবার জন্য বিজেপির থিম সং রেকর্ডিংয়ের এক ঝলক রইল। অমিত চক্রবর্তীর লেখা এই গানে গলা দেওয়া একটা দারুণ অভিজ্ঞতা।’
যা দেখার পর কমিশন কড়া ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে , বাবুল সুপ্রিয় যে দাবি করেছেন তাঁর গান প্রচার নিয়ে তা পুরোপুরি সত্যি নয়। ‘বাবুল নিজে তাঁর গান টুইট করেছিলেন। অথচ তিনি দাবি করেছিলেন, মিডিয়া তাঁর গান বাইরে বাজারে এনেছে। এক্ষেত্রে তাঁর কিছু করার ছিল না। কিন্তু, কমিশনের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে এটা প্রমাণিত যে বাবুল নিজেও তাঁর গান টুইট করে সকলের সামনে এনে ছিলেন।’
সব দিক খতিয়ে দেখে কমিশনের তরফে বিজেপিকে জানানো হয়, তাদের নির্বাচনী থিম সংটি পরিবর্তন করতে হবে। কোথায় কোথায় পরিবর্তন করতে হবে, সে সম্পর্কেও সুস্পষ্ট গাইডলাইন দেওয়া হয়েছিল। বিজেপি তাতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ওই বিতর্কিত গানের প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হল। যার ফলে মান্যতা পেল তৃণমূলের দাবি। অন্যদিকে, এর ফলে ভোটের মুখে আবারও ধাক্কা খেল বঙ্গ বিজেপি।