ছবি তোলার ভালবাসা থেকে নতুন জায়গা আবিষ্কার করার অদম্য টান৷ বয়সের বাধা উপেক্ষা করে তারুণ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন দিলীপ সেনগুপ্ত৷ ভ্রমণপিপাসুদের উপহার দিচ্ছেন নতুন পর্যটনস্থল৷ এই আবিষ্কারের নাম মিশন বাংলা৷
দিলীপবাবু জানাচ্ছেন “ছবি তুলতে আমি বরাবর ভালোবাসি এবং ঘুরতেও৷ সেখান থেকেই এই নেশা জাঁকিয়ে বসেছে৷
তিনি জানালেন, “আমার জন্ম কলকাতায় হলেও পড়াশোনা করেছি কোন্নগরের নবগ্রামে৷ তারপর সিটি কলেজ আমহার্স্ট থেকে বিএসসি পাশ করে যাদবপুর থেকে বিটেক করেছি৷ এমটেক পড়াকালীন চাকরি পাই আইপিসিএলে৷ এখানেই আমি বরাবর করেছি৷ ২০০৯ নাগাদ অবসর নিই৷ তারপর ছবি তোলার নেশা ছিলই৷ সেখান থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতাম, যার নাম দিয়েছিলাম মিশন বাংলা৷”
তারুণ্যে ভরপুর দিলীপ জানিয়েছেন, “কলকাতা-সহ গোটা পশ্চিমবঙ্গের নানা দর্শনীয় স্থান ঘুরেছি৷ ২০১৮-২০১৯-এ যেখানে গেলাম অনেক রিসার্চ করে গেছিলাম৷ আমি ম্যাপ বানিয়েছিলাম৷ মালদা- দুই ২৪ পরগণা ঘুরেছি৷ প্রায় অনেক নতুন জায়গা খুঁজে পেয়েছি৷ তবে একাই গেছি সব জায়গাতে৷ কারণ সবসময় পরিবার নিয়ে যাওয়া যায় না এই সমস্ত ক্ষেত্রে৷ কারণ আমার বাইরে গিয়ে থাকা-খাওয়া নিয়ে কোনওরকম সমস্যা নেই৷ ঘুরতে গিয়ে ঘোরাটাই আমার কাছে আসল৷ এই যে এত নতুন জায়গা দেখেছি ছবি তুলেছি এটাই মুখ্য৷”
একা ঘুরতে অসুবিধা হয় না তাঁর? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বললেন “না! আমার এত বয়সেও আমি একা ঘুরছি এটাই আমার সাফল্য৷ তবে কী কয়েকজন মিলে গেলে খরচটা ভাগ হয় একার ক্ষেত্রে সেটা হয় না৷ আর তাছাড়া আমার কোথাও কোনও অসুবিধা হয়নি৷ আমি খুব ভালো ভাবে ঘুরতে পেরেছি৷”
ঘুরতে যাওয়ার মজাদার অভিজ্ঞতাও জানালেন তিনি৷ তিনি বলছেন, “পশ্চিম মেদিনীপুরের এক রাজবাড়িতে গেছিলাম৷ তো সেখানে এক পুরনো মন্দিরে গেছি৷ তার গেট আগেকার দিনের মতই সেই শিকল দেওয়া৷ আমি সেই গেট খুলে ভেতরে ঢুকেছি, গিয়ে দেখলাম খুব সুন্দর পালকি, সেখানে বসে ছবিও তুললাম৷ আরও খানিক এগিয়ে একটা দারুণ পুকুর আছে৷ আমি সেখানে খানিকক্ষণ ঘুরে ফেরার সময় দেখলাম দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে কেউ চলে গেছে৷ তবে আমি ভয় পাইনি কারণ আমি একাই বেরিয়েছি৷ একটু ডাকাডাকি করে বুঝলাম কাছাকাছি কেউ নেই৷ আমি তখন আমার ব্যাগে যে টুথব্রাশ ছিল, তার প্যাকেট দিয়ে গেটের ফাঁক দিয়ে কোনরকমে শিকলটা খুলেছিলাম৷ এই ঘটনাটা আজও মনে আছে৷ তাছাড়াও রাস্তায় কোনও অসুবিধায় পড়লে গ্রামের মানুষ খুব সাহায্য করেছেন৷”
মিশন বাংলা নিয়ে আপনার পরবর্তী ভাবনা হিসাবে জানালেন, “আমার ইচ্ছে আছে সিজনাল ট্যুর করব৷ মানে ধরুন দোলের সময় পলাশ-শিমুলের ঢাকা রাস্তার ছবি তুলব, বর্ষায় আরও সুন্দরী হয়ে ওঠা রুপসী বাংলার ছবি তুলব”৷ ‘এখন খবর’-এর পক্ষ থেকে তাঁকে শুভেচ্ছা৷