গত বৃহস্পতিবারই তাঁর ব্লগ বোমায় বেকায়দায় পড়েছিল গেরুয়া শিবির। নিজের ব্লগে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘কেউ রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির বিরোধীতা করলেই বা বিজেপির সঙ্গে রাজনৈতিক মতপার্থক্য রয়েছে এমন কাউকেই অ্যান্টিন্যাশনাল বলতে হবে, এটা ঐতিহ্য বিজেপির নয়।’ আর এবার দেখা গেল, শুধু পদ্মবনই নয়, তাঁর ওই এক ব্লগেই জাতীয় রাজনীতি তোলপাড় করে দিয়েছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী। বৃহস্পতিবার থেকেই টানা টুইটারে ট্রেন্ড করছে তাঁর প্রসঙ্গে নানা মত, কথা ও ইতিহাস। মত প্রকাশ করেছেন দেশের বিখ্যাত মানুষরাই।
যেমন ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ আডবাণীর ব্লগ পড়ে লিখেছেন, ‘বাবরি মসজিদের কালো ইতিহাস যাঁর হাতে রচিত হয়েছিল, সেই লালকৃষ্ণ আডবাণী যতই বলুন, তাঁর লেখা থেকে মুক্তমনা চিন্তা আশা করা নিরর্থক।’ আবার আডবাণীর লেখা থেকে একটি লাইন তুলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পি চিদম্বরম লিখেছেন, ‘মোদী সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর এক অভিযোগ করেছেন আডবাণী।’ এই নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রের স্বামী রবার্ট বঢরাও।
বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রকৃত রাজনীতিবিদ ও এক সময়ে বিজেপির স্তম্ভ এল কে আডবাণীর বার্তাই আজ বিজেপির মতো দলে বিস্মৃত। উপেক্ষা নয়, রাজনীতিতে প্রকৃত নেতাদের সম্মান পাওয়া উচিত। তাঁদের হারিয়ে যেতে দেওয়া উচিত নয়।’ এর পর ওই পোস্টেই নিজের মতও প্রকাশ করেছেন রবার্ট। লিখেছেন, ‘আমরা যদি এই সব প্রবীণ নেতার অভিজ্ঞতার মূল্য দিতে না পারি, তা হলে সেটা অবমাননাকর। এক প্রাজ্ঞ বিরোধী নেতা হিসেবে আমি সব সময় ওঁকে সম্মান করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তাঁর দলই আজ তাঁকে ভুলে গেছে।’
যদিও রামচন্দ্র গুহর মতোই অনেকেই অন্য কথা বলেছেন। এক পক্ষের নেটিজেনদের দাবি, লালকৃষ্ণ আডবাণী কাঁদুনি গাইছেন বাধ্য হয়ে। কারণ আজ বিজেপি থেকে তাঁকে ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে। দলে এত দিনের উচ্চ পদ হারিয়েছেন তিনি। আবার ১৯৯০ সালের রথযাত্রার কথা মনে করিয়েছেন কেউ কেউ। বলেছেন, সেই যাত্রার জন্য সারা দেশে বিপুল প্রাণহানি হয়েছিল। তার দায় এড়িয়ে এখন আডবাণীর সাধু সাজার কোনও মানে হয় না।
অন্যদিকে, বরাবরই সৌজন্যের রাজনীতিতে বিশ্বাসী বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আডবাণীর বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই তিনি টুইটারে লেখেন, গণতান্ত্রিক সৌজন্যের বিষয় নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান নেতা, প্রাক্তন উপ-প্রধানমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রতিষ্ঠাতা।