হাতে বাকি আর মাত্র ৫ দিন। তারপরেই শুরু হবে লোকসভা নির্বাচন। তবে রাফাল, নোটবন্দী-সহ একাধিক ইস্যুর পাশাপাশি দলের গোষ্ঠীকোন্দল নিয়ে এই মুহূর্তে গোটা দেশজুড়েই বিপাকে গেরুয়া শিবির। পরিস্থিতি এমনই যে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাত নিয়েও সন্দিহান দলের অন্দরের নেতারাই। কারণ গুজরাতে ক্রমশই আলগা হচ্ছে মোদীর পায়ের তলার মাটি।
২০১৪-য় কংগ্রেসকে অলআউট করে দিলেও এবার লড়াই এত সহজ হচ্ছে না। কংগ্রেস এবার প্রবলতর প্রতিপক্ষ হয়ে উঠে আসছে। ইতিমধ্যেই সে রাজ্যে লড়াইয়ে ফিরেছে রাহুলের দল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির আসন সংখ্যা এবার কমবে মোদী-রাজ্যে। গুজরাতে ২০১৪ সালে বিজেপি ৬০.১১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৩.৪৫ শতাংশ। জানা গেছে, কংগ্রেস এবার সে রাজ্যে ৮ শতাংশ ভোট বাড়াতে সমর্থ হচ্ছে। অর্থাৎ কংগ্রেস পেতে পারে ৪১ শতাংশ ভোট। অর্থাৎ প্রায় ১১ শতাংশ ভোট কমার সম্ভাবনা পদ্মশিবিরের।
শুধু তাই নয়। খোদ মোদীর রাজ্যেই বিজেপির জনপ্রিয়তা কমছে। এই আভাস মিলেছে এক বেসরকারি সংবাদ মাধ্যমের সমীক্ষায়। ফলে বিজেপির অন্দরেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, এই প্রবল বিজেপি বিরোধী হাওয়ায় মোদীর রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কি গত বারের জেতা আসন ধরে রাখতে পারবে? গতবার গুজরাটের সব ক’টি আসন জিতলেও, বিজেপির অতি বড় সমর্থকও এবার তার পুনরাবৃত্তি আশা করছেন না। দলেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে, এবার গুজরাটে বিজেপির জেতা আসনে থাবা বসাতে পারে বিরোধীরা।
উল্লেখ্য, বিধানসভা ভোটের ফলাফলে গুজরাতের ২৬ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৮টিতে এগিয়ে রয়েছে কংগ্রেস। রাজ্যের সৌরাষ্ট্র এবং উত্তর গুজরাতে কংগ্রেস ভাল ফল করেছিল। ওই এলাকার সব ক’টি আসন পেতে মরিয়া কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, গত তিন দশকের মধ্যে কংগ্রেস গুজরাটে সেরা ফল করেছে ২০১৭-র বিধানসভা নির্বাচনেই। ১৮২ আসনের বিধানসভায় ৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। সেখানে ৯৯টি আসন পায় বিজেপি। টানটান লড়াইয়ে শেষ হাসি বিজেপি হাসলেও, কংগ্রেসের উত্থানে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বেড়ে যায় গেরুয়া শিবিরের।
বিধানসভা ভিত্তিক ফলাফলে রাজ্যের বনসকান্ঠা, পাটন, মেহসানা, সবরকান্ঠা, সুরেন্দ্রনগর, জুনাগড়, আমরেলি ও আনন্দ লোকসভা কেন্দ্রগুলিতে বিজেপির চেয়ে এগিয়ে ছিল কংগ্রেস। তার মধ্যে ৪ আসনে ব্যবধান ৫০ হাজার বা তার চেয়েও বেশি। এবার তাই মোদীর গড়কে পাখির চোখ করেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হয়েছে গুজরাতের মাটিতে। কর্মীদের চাঙ্গা করতে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা জনসভাও করেছেন। ফলে সবমিলিয়ে বলা যায়, এবার তাঁর নিজের গড়েই বিপাকে পড়তে চলেছেন মোদী।